শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: আপিলের রায় বৃহস্পতিবার

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫, ১২:৩০ পিএম

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: আপিলের রায় বৃহস্পতিবার

ছবি- সংগৃহীত

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আপিল রায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঘোষণা করা হবে। এই মামলার আপিল আবেদনকারী রাষ্ট্রপক্ষ, যারা হাইকোর্টের রায়ে সকল আসামিকে খালাস দেওয়ার বিরুদ্ধে আপিল করে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছেন। এটি দেশের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও আইনি মামলার চূড়ান্ত রায় হতে চলেছে, যার দিকে এখন দেশের সকল রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষের দৃষ্টি নিবদ্ধ।

গত বছর ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সকল আসামিকে খালাস দিয়েছিল। এর আগে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালতের রায়ে তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্টের সেই রায় বাতিলের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। এই আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করা হয়েছে। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা, যেমন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও শিশির মনির, এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছেন এবং তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তদন্তের অভিযোগ তুলেছেন।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই মামলার রায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব, তারেক রহমান, এই মামলার অন্যতম প্রধান আসামি। এই রায় তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে সরাসরি প্রভাবিত করবে। এই গ্রেনেড হামলার ঘটনাটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে পরিচিত। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার জনসভায় এই বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং শেখ হাসিনাসহ কয়েকশ' নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে অনেকেই এখনো পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে আছেন।

এই রায় বিচার বিভাগের স্বাধীন কার্যকারিতা এবং ন্যায়বিচারের প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এই ধরনের স্পর্শকাতর মামলায় আদালতের রায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি কেবল একটি অপরাধের বিচার নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আইনের শাসনের ওপরও প্রভাব ফেলে। মামলার দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত রায়ের জন্য অপেক্ষা করছে জাতি। এই রায় দেশের আইনি ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে এবং ২১ আগস্টের ঘটনার বিচার নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্কের অবসান ঘটাবে।