জুলাই ১৯, ২০২৫, ০৫:৩১ পিএম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে আকস্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে মঞ্চে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ (১৯ জুলাই, ২০২৫) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য চলাকালে তিনি এই অসুস্থতা অনুভব করেন।
বক্তব্যের শুরুতে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান সমাবেশে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে দিক-নির্দেশনার বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, "আগামীর বাংলাদেশে আরেকটা লড়াই হবে ইনশাআল্লাহ। একটা লড়াই হবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে।"
তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, "এই দুর্নীতির মূল উৎপাটনের জন্য যা করা দরকার, আমরা তারুণ্য ও যৌবনের শক্তিকে একত্র করে সেই লড়াইয়েও ইনশাআল্লাহ বিজয় লাভ করব।" জামায়াতে ইসলামী যে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তুলবে, তার প্রমাণ কী— এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, "সবাইকে নিয়েই তা গড়ে তুলব। আমরা কথা দিচ্ছি, মুক্তি অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই অব্যাহত থাকবে।"
এই বক্তব্য দিতে গিয়েই মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি বসে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন এবং উপস্থিত নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করে বলেন, "আল্লাহ আমার হায়াত যতক্ষণ রেখেছেন তার এক মিনিটও বেশি থাকতে পারব না আমি। সুতরাং এতে আপনারা কেউ বিচলিত হবেন না।"
শাসনক্ষমতায় গেলে জামায়াতে ইসলামী কী করবে, তা জানিয়ে তিনি বলেন, "জামায়াতে ইসলামী যদি আল্লাহর ইচ্ছায় দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পায়, তাহলে মালিক হবে না, সেবক হবে ইনশাআল্লাহ।"
এর আগে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, "এই জনসমুদ্র গণবিস্ফোরণের সৃষ্টি করেছে। ১৭-১৮ বছর ধরে জামায়াত ইসলামী তথা ইসলামী শক্তির ওপর যত অত্যাচার জুলুম হয়েছে তার বিরুদ্ধে এই জনসমুদ্র গণবিস্ফোরণের সৃষ্টি করেছে।" তিনি আরও বলেন, "জামায়াতের নেতাদের তিলে তিলে মারা হয়েছে। জামায়াতের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে, ক্রসফায়ার, আয়নাঘর, রিমান্ড এসবে বাংলাদেশের সবথেকে মজলুম দল হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী।"
আজ দুপুর ২টায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের মূল পর্ব শুরু হয়। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রথম পর্ব। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি উদ্যানে প্রবেশ করলে নেতাকর্মীরা স্লোগানের মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানান।
দলটির দায়িত্বশীল নেতারা তাদের বক্তব্যে— গণহত্যার বিচার ও সংস্কার শেষে পিআর (প্রপোশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার ভিত্তিতে জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দিকনির্দেশনামূলক বার্তা দেন। সমাবেশের মূল মঞ্চে বসেন জামায়াতের জাতীয় নেতা, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কর্মপরিষদ সদস্য, বিভিন্ন দলের নেতা এবং জুলাইয়ের শহীদ পরিবারের প্রতিনিধিরা।
আপনার মতামত লিখুন: