সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ০৬:৫০ পিএম
৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে দুর্নীতি কিছুটা কমলেও তা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি, এমনটাই মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)-এর চেয়ারম্যান ফ্রাঁসোয়া ভ্যালেরিয়াঁ। তিনি বলেন, দুর্নীতি এখনো বিদ্যমান থাকলেও এটি বেড়েছে নাকি কমেছে, তা বলার মতো সময় এখনো আসেনি। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। টিআই প্রধানের এই সফর বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দুর্নীতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে।
আওয়ামী লীগ আমলের শাসনব্যবস্থাকে ‘স্বৈরাচারী ও দুর্নীতিগ্রস্ত’ উল্লেখ করে ভ্যালেরিয়াঁ বলেন, ক্ষমতা জনগণের সেবার পরিবর্তে মুনাফা অর্জনের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি জানান, প্রতি বছর বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে, যা বৈশ্বিক দুর্নীতির অর্থনীতির একটি অংশ। টিআই-এর হিসাব অনুযায়ী, এসব পাচারকৃত অর্থের বড় অংশ দুবাই, সিঙ্গাপুর, হংকং, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো আর্থিক কেন্দ্রে শেল কোম্পানি, ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ট্যাক্স হেভেনের মাধ্যমে চলে গেছে। এসব অর্থ জনকল্যাণে ব্যবহার না হয়ে রিয়েল এস্টেট এবং বিলাসবহুল সম্পত্তিতে বিনিয়োগ হয়েছে।
সম্প্রতি লন্ডনে ১৮৫ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পত্তি জব্দের ঘটনাকে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করে টিআই প্রধান বলেন, এটি প্রমাণ করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ফলপ্রসূ হতে পারে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই অর্থ যেন বিদেশি কোষাগারে আটকে না থেকে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফেরত আসে এবং তা অবশ্যই সুশীল সমাজের নজরদারিতে জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করা হয়। তিনি বাংলাদেশে উপকারী মালিকানা স্বচ্ছতাবিষয়ক খসড়া আইন দ্রুত পাস করার আহ্বান জানান। তার মতে, এই আইন শেল কোম্পানির আড়ালে থাকা প্রকৃত মালিকদের চিহ্নিত করবে, যারা প্রায়ই অবৈধ অর্থ পাচারে জড়িত। ভ্যালেরিয়াঁ বাংলাদেশকে একটি ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে উল্লেখ করে বলেন, নাগরিকদের আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায় এবং চুরি করা সম্পদ ফিরিয়ে আনা যেমন ন্যায়বিচার, তেমনি গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতারও ভিত্তি।