আগস্ট ১২, ২০২৫, ১১:০৫ এএম
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশের মোট ভোটারের ১০ শতাংশের বেশি প্রবাসী হলেও তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে এই প্রথমবারের মতো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য একটি ঐতিহাসিক উদ্যোগ নিয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই প্রবাসীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই লক্ষ্যে একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, যেখানে প্রবাসীরা নির্বাচনের আগেই ডাকযোগে তাদের ভোট দিতে পারবেন। এই পুরো প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন করবে ডাক বিভাগ।
ভোট দেওয়ার জন্য প্রবাসীদের প্রথমে একটি অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন একটি বিশেষ সফটওয়্যার বা মোবাইল অ্যাপ তৈরি করবে, যা গুগল প্লে-স্টোর বা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যাবে। এই অ্যাপে ই-কেওয়াইসি ফর্ম পূরণ করে মুখের ছবি ও এনআইডি যাচাইয়ের মাধ্যমে ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে হবে।
নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন ডাক বিভাগের মাধ্যমে প্রবাসীদের কাছে ব্যালট পাঠাবে। ভোট দেওয়ার জন্য তিনটি খাম ব্যবহার করা হবে, যার মধ্যে একটিতে ব্যালট ও ইনস্পেকশন ফরম থাকবে। ভোট দেওয়ার পর ব্যালট সংবলিত খামটি ডাক বিভাগের মাধ্যমে আবার ফেরত পাঠানো হবে। এই খামগুলো নিজ নিজ নির্বাচনী আসনের রিটার্নিং অফিসারের কাছে যাবে এবং দেশে নির্বাচনের দিন সেগুলোর ভোট গণনা করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ বলেন, "প্রবাসী যারা নিবন্ধন করবেন, তাদের কাছে নির্বাচনের আগেই ব্যালট পেপার পাঠানো হবে এবং ভোট সংগ্রহ করা হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন করবে ডাক বিভাগ।" তিনি আরও জানান, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ভোটগ্রহণ ও গণনা দেশের নির্বাচনের দিনেই সম্পন্ন হবে। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে নেওয়া 'দেশের বাহিরে ভোটদান সিস্টেম উন্নয়ন এবং বাস্তবায়ন' শীর্ষক প্রকল্পটি এখন পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
এই পদক্ষেপটি বাস্তবায়িত হলে প্রথমবারের মতো প্রবাসীরা দেশের নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন।