জুলাই ২২, ২০২৫, ০৩:০৭ পিএম
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী তানভীর হোসেনের মরদেহ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়ার পথে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। সোমবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় ফ্রিজার ভ্যানটি সড়ক বিভাজকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এই ঘটনায় তানভীরের চাচাতো ভাই সাইফুল আহত হয়েছেন। শোকগ্রস্ত পরিবারের জন্য এই দুর্ঘটনা নতুন করে সংকট তৈরি করেছে।
মির্জাপুর উপজেলার ওয়ার্শী ইউনিয়নের নগরভাদ গ্রামের রুবেল মিয়ার ১৪ বছর বয়সী ছেলে তানভীর হোসেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হয়। তার মরদেহ অ্যাম্বুলেন্স ফ্রিজার ভ্যানে করে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথিমধ্যে রাত ২টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দ্রুতগতিতে চলতে থাকা ফ্রিজার ভ্যানটি মহাসড়কের আইল্যাণ্ড বা সড়ক বিভাজকের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। এতে গাড়িতে থাকা নিহত তানভীরের চাচাতো ভাই সাইফুল আহত হন।
তানভীরের চাচা ও ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ জানান, এই দুর্ঘটনার পর অন্য একটি গাড়িতে করে তানভীরের মরদেহ টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোর ৪টার দিকে তানভীরের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায়। পরিবারের সদস্যরা এমনিতেই তানভীরকে হারিয়ে শোকাহত ছিলেন, এর মধ্যে মরদেহ নিয়ে আসার পথে এমন দুর্ঘটনা তাদের উপর এক নতুন মানসিক আঘাত হেনেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের সদস্যরা এখন সাইফুলের শারীরিক অবস্থা নিয়েও চিন্তিত।
অবশেষে সব বাধা পেরিয়ে আজ সকাল ১০টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তানভীরকে দাফন করা হয়েছে। গ্রামের মানুষ এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং তানভীরের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। বিমান দুর্ঘটনায় সন্তান হারানোর বেদনা এবং এরপর মরদেহ পরিবহনের সময় এমন অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা, তানভীরের পরিবারের জন্য এক চরম দুঃসময় বয়ে এনেছে।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই ঘটনায় ২৬ জন শিশুসহ মোট ২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং ৭০ জন আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তানভীরের মরদেহ পরিবহনের সময়কার এই দুর্ঘটনা আরও একবার মনে করিয়ে দেয়, দুর্যোগের সময়েও বিভিন্ন স্তরে কতটা ঝুঁকি থেকে যায়। প্রশাসনের উচিত, এমন পরিস্থিতিতে মরদেহ ও আহতদের পরিবহন ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শোকাহত পরিবারগুলোর প্রতি প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা।
আপনার মতামত লিখুন: