বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড, কক্সবাজারের রায়

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২২, ২০২৫, ০৪:৪৩ পিএম

স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড, কক্সবাজারের রায়

ছবি- সংগৃহীত

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার দায়ে কক্সবাজারের রামু উপজেলার মোহাম্মদ রাশেদ (৩৫) নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. ওসমান গণি এই রায় ঘোষণা করেন। রাশেদ রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের উমখালী এলাকার মৃত নূর আহমদের ছেলে।

আদালতে নিযুক্ত সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মীর মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২০১৬ সালের ২৭ জুলাই যৌতুক না পেয়ে স্বামী মোহাম্মদ রাশেদ তার স্ত্রী বুলবুল আকতারকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেন। বুলবুল আকতারকে গুরুতর আহত অবস্থায় দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন তার মৃত্যু হয়, যা এই বর্বর ঘটনার মর্মান্তিক পরিণতি।
 

এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত বুলবুলের ভাই মঈনুল ইসলাম বাদী হয়ে রামু থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বুলবুল আকতার একই উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ভিলেজারপাড়ার বাসিন্দা আবুল খায়েরের মেয়ে ছিলেন।

মীর মোশাররফ হোসেন আরও জানান, মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শেষে আদালত আজ এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মোহাম্মদ রাশেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি রাশেদ আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়।
 

তবে, এই মামলার আরও দুই আসামি ছিলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। এই রায় নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের একটি বার্তা এবং সমাজে এমন অপরাধের প্রবণতা কমাতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যৌতুকের জন্য নারীর প্রতি সহিংসতা বাংলাদেশের একটি গভীর সামাজিক ব্যাধি। এই ধরনের ঘটনা শুধু একটি পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং পুরো সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই রায় আবারও স্মরণ করিয়ে দেয় যে, যৌতুক প্রথা এবং এর ফলস্বরূপ সংঘটিত অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ অপরিহার্য। আশা করা যায়, এই রায় ভবিষ্যতে এমন অপরাধ সংঘটনে অপরাধীদের নিরুৎসাহিত করবে এবং নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে সহায়ক হবে।