বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রয়োজনে আবারও ইরানে হামলা করবে যুক্তরাষ্ট্র

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২২, ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম

প্রয়োজনে আবারও ইরানে হামলা করবে যুক্তরাষ্ট্র

সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক হামলার হুমকি দিয়েছেন। সম্প্রতি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি স্বীকার করেছেন যে, জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই স্বীকারোক্তির পরপরই ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে জানান, প্রয়োজন হলে ওয়াশিংটন আবারও একই ধরনের হামলা চালাবে। এই হুমকি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে।

সোমবার রাতে ট্রাম্প তার পোস্টে লেখেন, "ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে, আমাদের হামলায় পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি শুরু থেকেই বলছিলাম, এটি অত্যন্ত সফল অভিযান ছিল। প্রয়োজন হলে আমরা আবারও সেটাই করব।" তার এই মন্তব্য মার্কিন প্রশাসনের কঠোর অবস্থানকে তুলে ধরে।

এই প্রসঙ্গে ট্রাম্প সিএনএন-এরও কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "সিএনএন সম্প্রতি দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। অথচ গোয়েন্দা তথ্য এবং বাস্তব পরিস্থিতি বলছে ভিন্ন কথা।" ট্রাম্প সিএনএনের একজন প্রতিবেদককে বরখাস্তের দাবি জানিয়ে লেখেন, "ভুয়া খবর ছড়ানোর জন্য সিএনএনের উচিত সেই সাংবাদিককে সঙ্গে সঙ্গে বরখাস্ত করা এবং আমার সঙ্গে সেই মহান পাইলটদের কাছে ক্ষমা চাওয়া, যারা এই ঐতিহাসিক মিশনে অংশ নিয়েছিলেন।" এটি সংবাদমাধ্যমের ওপর ট্রাম্পের চিরাচরিত আক্রমণের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এই হামলার পর ইরানের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিতে বড় ধরনের ক্ষতির কথা স্বীকার করা হলো। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচি বলেন, "সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে, কারণ ক্ষতির পরিমাণ ছিল ব্যাপক। তবে আমরা এটি কখনোই স্থায়ীভাবে ত্যাগ করতে পারি না। এটা আমাদের বিজ্ঞানীদের অর্জন, তার চেয়েও বড় কথা—এটা আমাদের জাতীয় গর্বের প্রতীক।" তার এই বক্তব্য একদিকে ক্ষতির স্বীকারোক্তি, অন্যদিকে জাতীয় মর্যাদার প্রশ্নে ইরানের অনড় অবস্থানের ইঙ্গিত।

দ্য টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের মধ্যে ওয়াশিংটনের এই বিমান হামলা ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমে বড় ধাক্কা দিয়েছে। তবে তেহরান এখনও তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। তাদের ভাষ্য, জাতীয় স্বার্থ ও বিজ্ঞানীদের মর্যাদার প্রশ্নে তারা সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প চালিয়েই যাবে।

এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়ছে। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই সামরিক হুমকি-ধমকি অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়। যেকোনো ভুল পদক্ষেপ এই অঞ্চলে বড় ধরনের সংঘাতের জন্ম দিতে পারে।