বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২

এ যেন সিনেমার গল্প: মায়ের অপমানের বদলা নিতে ১০ বছর পর খুন

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২২, ২০২৫, ০৭:০১ পিএম

এ যেন সিনেমার গল্প: মায়ের অপমানের বদলা নিতে ১০ বছর পর খুন

সংগৃহীত ( প্রতীকি ছবি )

১০ বছর আগে এক ব্যক্তি তাঁর মাকে অপমান করেছিলেন, এমনকি মারধরও করেছিলেন। সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে পাগলের মতো ওই ব্যক্তিকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন ওই নারীর সন্তান। এ যেন ঠিক কোনো সিনেমার গল্প। তবে বাস্তবে ছিল নিষ্ঠুর এক প্রতিশোধের কাহিনি।

এই প্রতিশোধের গল্প হলো সোনু কশ্যপ নামের ভারতের উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌর এক তরুণের। এই তরুণ মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে লক্ষ্ণৌর রাস্তায় ১০ বছর ধরে সেই মানুষটিকে খুঁজেছেন। ওই ব্যক্তির নাম মনোজ কুমার, যিনি লক্ষ্ণৌতে ডাব বিক্রি করতেন।

সোনুর এই প্রতিশোধের যাত্রায় যোগ দেন তাঁর বন্ধুরাও। তাঁদের সোনু প্রতিশ্রুতি দেন, মনোজ নামের ওই ব্যক্তিকে খুনের পর এক জমকালো পার্টি দেওয়া হবে। পরিকল্পনা করে তাঁরা সবাই মিলে খুন করেন মনোজকে।

খুনের কাহিনি: এক দশকের প্রতিশোধের আগুন

প্রায় ১০ বছর আগে মনোজ কোনো একটি ঘটনায় সোনুর মাকে মারধর করেন এবং এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। সে সময় থেকেই মনোজের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার শপথ নেন সোনু এবং তাঁকে খুঁজে বেড়াতে থাকেন। সময় পেরিয়ে যায়, কিন্তু সোনু হাল ছাড়েন না। অবশেষে তিন মাস আগে তিনি লক্ষ্ণৌর মুনশি পুলিয়া এলাকায় মনোজকে দেখতে পান। তখনই শুরু হয় পরিকল্পনা।

মনোজের রুটিন পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন সোনু। মনোজ কোথায় যান, কখন দোকান বন্ধ করেন—সবকিছু খেয়াল করেন। এরপর তিনি তাঁর চার বন্ধুকে সঙ্গে নেন এবং তাঁদের বলেন, মনোজকে খুনের পর পার্টি দেওয়া হবে।

গত ২২ মে মনোজ দোকান বন্ধ করেন। এ সময় তিনি একা ছিলেন। সুযোগ বুঝে সোনু ও তাঁর বন্ধুরা লোহার রড দিয়ে তাঁকে বেদম মারধর করে ফেলে রেখে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনোজ মারা যান।

খুনের পর পার্টি এবং পুলিশের হাতে ধরা:

পুলিশের জন্য শুরুতে মামলাটি বেশ জটিল ছিল। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ছবি পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু তাঁদের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

মনোজকে খুনের পর সোনু তাঁর বন্ধুদের জন্য মদ্যপানের বেশ বড় এক পার্টি দেন। সেই পার্টির ছবি কেউ একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। সেখান থেকেই পুলিশ সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের শনাক্ত করে।

সিসিটিভিতে দেখা একজনের সঙ্গে মিলে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একজনের ছবির পোশাক। ওই ব্যক্তি খুনের দিন যে কমলা রঙের টি-শার্ট পরেছিলেন, পার্টির ছবিতেও তাঁর গায়ে সেই পোশাক দেখা যায়।

এরপর পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকেই গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ ব্যক্তি হলেন সোনু, রণজিৎ, আদিল, সালামু ও রহমত আলী।