মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

গণপরিবহণ সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি, ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০২:১৭ পিএম

গণপরিবহণ সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি, ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী

ছবি- সংগৃহীত

ঢাকার গণপরিবহণ ব্যবস্থা একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে আছে। এর ফলে সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে রাখা, অতিরিক্ত গাড়ি এবং চাঁদা আদায়ের কারণে ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

চালকদের দাবি, তারা ইচ্ছে করে সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন না, কিন্তু অতিরিক্ত গাড়ি এবং মালিক সমিতি কর্তৃক নির্ধারিত দিনচুক্তি ও গেট পাস (জিপি) নামক চাঁদার অর্থ তুলতে তাদের বাধ্য হয়েই এমনটা করতে হয়।

ভুক্তভোগী চালকরা জানান, প্রতিদিন প্রতিটি ট্রিপে ১২ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়, এর সঙ্গে ড্রাইভার ও স্টাফদের বেতনও রয়েছে। এর উপর ভিক্টর পরিবহণের মতো রুটে প্রতিদিন ৫৫০ টাকা 'জিপি' নামক চাঁদা জমা দিতে হয়। এই টাকা জমা না দিলে চালকরা গাড়ি চালাতে পারেন না। এই অর্থ মালিক সমিতির কাছে চলে যায়। একটি সাধারণ হিসাবে, কেবল একটি রুট থেকেই বছরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা আদায় হয়। রাজধানীতে চলাচলকারী ৭ হাজার গাড়ির হিসাব করলে এই অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় দেড়শ কোটি টাকা।

একজন বাস চালক জানান, 'গেট পাস' বা 'জিপি' দিলে রাস্তায় সুবিধা পাওয়া যায়। ট্রাফিক সার্জেন্টরা বাস আটকালে তারা সহযোগিতা করেন, এমনকি দুর্ঘটনা ঘটলেও তারা মীমাংসা করে দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জানান, এই চাঁদার টাকা সার্জেন্ট, ট্রাফিক ইন্সট্রাক্টর, এডিসি এবং ডিসি পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাবুল দাবি করেন, এই টাকা কোম্পানির খরচ এবং কর্মকর্তাদের সম্মানী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তিনি আরও বলেন, এই টাকা শ্রমিকদের কল্যাণেই ব্যয় হয়। তবে পরিবহণ সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, এই টাকা মালিক সমিতি ভাগ-ভাটোয়ারা করে খায়।

নগর পরিবহণ বিশেষজ্ঞ ড. মো. সালাহউদ্দিন বলেন, গেট পাসের নামে টাকা আদায়ের সরাসরি প্রভাব যাত্রীদের ওপর পড়ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, আইন ও প্রয়োগকারী বাহিনী থাকা সত্ত্বেও গণপরিবহণ কেন মালিক সমিতির হাতে জিম্মি থাকবে? তিনি এই সমস্যা সমাধানে সরকারকে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার পরামর্শ দেন।

যাত্রী এবং শ্রমিক উভয়ই এই সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে চলা এই বিশৃঙ্খলা একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর কারণে সমাধান করা যাচ্ছে না।