শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২

৭ কলেজ পায়নি কোনো শিক্ষার্থী, বাকি ৭১টিতেও তীব্র সংকট

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫, ১১:২৮ এএম

৭ কলেজ পায়নি কোনো শিক্ষার্থী, বাকি ৭১টিতেও তীব্র সংকট

ছবি - সংগৃহীত

উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৭৮টি কলেজের মধ্যে ৭টি কলেজ কোনো শিক্ষার্থী পায়নি এবং বাকি ৭১টিতেও তীব্র শিক্ষার্থী সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার সবচেয়ে ভালো বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজেও আসন খালি রয়েছে। কলেজটিতে ১২০০ আসনের বিপরীতে ব্যবসায় শিক্ষায় ৫০, মানবিকে ৬ এবং বিজ্ঞানে ১টি আসন ফাঁকা রয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য কলেজের চিত্র আরও হতাশাজনক। প্রতিটি কলেজের ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে, সাতটি কলেজ ভর্তির জন্য একজনও শিক্ষার্থী পায়নি। বেশ কিছু কলেজে মাত্র এক বা দুজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে হতাশা কাজ করছে এবং ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সরকারি সুবিধা বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, এই অবস্থার মূল কারণ হলো এ বছর এসএসসিতে পাসের সংখ্যা আসন সংখ্যার তুলনায় প্রায় অর্ধেক। জেলার কলেজগুলোতে মোট ৪১ হাজার ৮৪০টি আসন রয়েছে, যেখানে এ বছর এসএসসি পাস করেছে মাত্র ২০ হাজার ২২২ জন। এছাড়া, অনেক শিক্ষার্থী জেলার বাইরের ভালো কলেজে সুযোগ পেয়ে যাওয়ায় বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মনির হোসেন জানান, তাদের ৪৫০ আসনের বিপরীতে এখনো কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। তিনি বলেন, “ভর্তির পুরো প্রক্রিয়া এখন অনলাইনে হওয়ায় আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা যদি আবারও ভর্তির সুযোগ পাই, তাহলে হয়তো শিক্ষার্থী পাওয়া যেতে পারে।”

শিক্ষার্থী না পাওয়া কলেজগুলোর মধ্যে রয়েছে নবীনগর উপজেলার সাতগাঁও আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জিনোদপুর ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও রাবেয়া মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এছাড়াও জেলা সদরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সেন্ট্রাল কলেজ ও সাদেকপুর ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উলুকান্দি কলেজও কোনো শিক্ষার্থী পায়নি।

অনেক কলেজে হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। সরাইলের তিতাস মডেল কলেজ ৪৫০ আসনের বিপরীতে মাত্র একজন শিক্ষার্থী পেয়েছে। বাঞ্ছারামপুরের ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম কলেজ পেয়েছে মাত্র ১৩ জন এবং আশুগঞ্জের বগৈর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ১৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। বিজয়নগরের কবি সানাউল হক কলেজে ৪৫০ আসনের বিপরীতে ৩০ জন, নাসিরনগরের বিজয়লক্ষী স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৩০০ আসনের বিপরীতে ২৮ জন, এবং কসবার সিরাজুল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৪৫০ আসনের বিপরীতে মাত্র ২৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ উভয়ই কমেছে। গত বছরের ৮০.৪৪ শতাংশ পাসের হারের তুলনায় এবার পাসের হার ৬৯.৪৪ শতাংশ। এই পাসের হার কমে যাওয়াতেই মূলত কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দিয়েছে। ৭ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভর্তির কাজ শেষ করে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।