রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২

৩৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতি আগস্টে

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ০৪:০০ পিএম

৩৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতি আগস্টে

ছবি - সংগৃহীত

গত আগস্ট মাসে দেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, যা গত ৩৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে জুলাই মাসে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ।২০২২ সালের জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, কিন্তু এরপর আর কখনো তা ৮ শতাংশের নিচে নামেনি। বিবিএসের আগস্ট ২০২৫ মাসের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এক মাসের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতি ০.২৭ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে।

খাদ্য ও খাদ্য-বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি

বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, আগস্টে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৭.৬০ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৭.৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্য-বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি আগস্টে ৮.৯০ শতাংশ হয়েছে, যা জুলাইয়ে ছিল ৯.৩৮ শতাংশ।

শহর ও গ্রামের চিত্র

শহর ও গ্রামের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গ্রামে আগস্টে সাধারণ মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮.৩৯ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৮.৫৫ শতাংশ। অন্যদিকে শহরে আগস্টে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮.২৪ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৮.৯৫ শতাংশ। এতে বোঝা যায়, উভয় ক্ষেত্রেই মূল্যস্ফীতি কমলেও গ্রামে দামের চাপ কিছুটা বেশি।

খাদ্যখাতে গ্রামে মূল্যস্ফীতি ৭.৫০ শতাংশ এবং শহরে ৭.৮৭ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্য-বহির্ভূত খাতে গ্রামে হার ৯.২৮ শতাংশ আর শহরে ৮.৪৮ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট হয় যে, যদিও শহরে খাদ্য-বহির্ভূত খাতের ব্যয় বেশি, গ্রামের মানুষ খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বেশি চাপ অনুভব করছে।

দীর্ঘমেয়াদি হিসাবে, সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত বারো মাসের গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯.৫৮ শতাংশ, যা তার আগের বারো মাসের (৯.৯৫%) তুলনায় কম। এতে সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

বিবিএস-এর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, আগস্টে খাদ্যপণ্যের দাম কমার মূল কারণ হলো মৌসুমি সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম হ্রাস পাওয়া। তবে অখাদ্য খাত, বিশেষ করে বাড়ি ভাড়া, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচ এখনও ঊর্ধ্বমুখী থাকায় সামগ্রিক চাপ পুরোপুরি কমেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি কমা ইতিবাচক হলেও তা এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। টেকসইভাবে মূল্যস্ফীতি কমাতে হলে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এবং কারসাজি রোধে কঠোর তদারকি প্রয়োজন।