সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০২:৩৯ পিএম
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি বিতর্কিত পুনর্গঠন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে, যা ফাঁস হয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো গাজার ভূখণ্ডকে ১০ বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনা এবং একে একটি অত্যাধুনিক পর্যটন ও প্রযুক্তি কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা। 'দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট'-এর প্রতিবেদনে হোয়াইট হাউসের ৩৮ পৃষ্ঠার প্রস্তাবনা থেকে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
এই প্রস্তাবনাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘গাজা রিকনস্টিটিউশন, ইকোনমিক অ্যাক্সেলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন ট্রাস্ট’ (গ্রেট ট্রাস্ট)। এর আওতায়, গাজার ২০ লাখ বাসিন্দাকে তাদের ভূমি ছেড়ে স্বেচ্ছায় অন্য দেশে চলে যাওয়ার বা গাজার ভেতরেই সুরক্ষিত অঞ্চলে স্থানান্তরিত হওয়ার আহ্বান জানানো হবে। যারা তাদের ভূমির ওপর অধিকার ছেড়ে দেবেন, তাদের জন্য থাকছে নানা আর্থিক সুবিধা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমি ত্যাগের বিনিময়ে প্রত্যেককে নগদ ৫,০০০ ডলার, চার বছরের জন্য ভাড়া ভর্তুকি এবং এক বছরের খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হবে। এছাড়াও, এই প্রস্তাবনায় গাজায় আটটি ‘এআই-চালিত স্মার্ট সিটি’ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে আগ্রহী বাসিন্দারা অ্যাপার্টমেন্ট পাবেন অথবা এই অর্থ ও সুবিধা ব্যবহার করে অন্য দেশে নতুন জীবন শুরু করতে পারবেন।
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এখানে কাঁচ ও ধাতুর সুউচ্চ ভবন, পার্ক, গলফ কোর্স, এবং আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট থাকবে। এটি গাজার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পর্যটন ও প্রযুক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বলে প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনাটি ইসরায়েলিদের প্রতিষ্ঠিত 'গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন' (জিএইচএফ) কর্তৃক তৈরি করা হয়েছে। এতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নামেও বিভিন্ন ‘মেগা-প্রকল্প’ পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেখানে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে।
সম্প্রতি ট্রাম্প টনি ব্লেয়ারের সাথে গাজার পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা এই পরিকল্পনার গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এই প্রস্তাবনা একটি নতুন ভূরাজনৈতিক কাঠামো তৈরির চেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।