সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম
ভূ-রাজনৈতিক টানাপড়েন আরও তীব্র হচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর পর এবার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভেনেজুয়েলা তাদের উপকূলবর্তী ৪টি প্রদেশ এবং একটি দ্বীপে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করেছে। খবর ব্লুমবার্গের।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদ্রিনো লোপেজ এক ভিডিও বার্তায় জানান, প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নির্দেশে সব ধরনের সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে জুলিয়া, ফালকন, নুয়েভা এসপার্তা, সুক্রে এবং ডেলটা আমাকুরো অঞ্চলে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী লোপেজ বলেন, ‘আমাদের সেনারা এখন সর্বোচ্চ প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে। দেশের আকাশসীমা, উপকূল ও কৌশলগত স্থাপনাগুলো রক্ষায় কোনো ফাঁক থাকবে না।’
এদিকে গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে অন্তত ৩টি যুদ্ধজাহাজ এবং ৪,০০০ সেনা মোতায়েন করে। ওয়াশিংটনের দাবি, এই অভিযান ছিল মাদকচক্র মোকাবিলার অংশ। তবে সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র একটি নৌকায় হামলা চালালে ১১ জন নিহত হয়, যাদের বিরুদ্ধে ভেনেজুয়েলা থেকে মাদক পাচারের চেষ্টা করার অভিযোগ আনা হয়।
এই ঘটনার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়ে ওঠে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ভেনেজুয়েলা অন্তত দুটি যুদ্ধবিমান পাঠায় আন্তর্জাতিক জলসীমায়, যেগুলো একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজের কাছাকাছি অবস্থান নেয়। যদিও কারাকাস আনুষ্ঠানিকভাবে এই তথ্য নিশ্চিত করেনি।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী লোপেজ বলেন, ‘আমাদের বিমানবাহিনী সার্বক্ষণিক আকাশ টহল দিচ্ছে। একই সঙ্গে নৌবাহিনীও ক্যারিবীয় ও আটলান্টিক উপকূলে টহল জোরদার করেছে।’
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘ভেনেজুয়েলার কোনো যুদ্ধবিমান যদি মার্কিন যুদ্ধজাহাজের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে তা ভূপাতিত করা হবে।’
বিশ্লেষকদের মতে, ভেনেজুয়েলার এই নতুন সেনা মোতায়েন দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। দুই দেশের মধ্যে এ উত্তেজনা নতুন কোনো সংঘাতে রূপ নেবে কি না, তা নিয়ে এখন আন্তর্জাতিক মহলে শঙ্কা বাড়ছে।