আগস্ট ২৩, ২০২৫, ১০:০৭ এএম
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের ইসলামি দলগুলো নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে একটি বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চাইছে। তবে এই ঐক্যপ্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়টি। অধিকাংশ ইসলামি দলই জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে আগ্রহী নয়, যদিও জামায়াত এ বিষয়ে আশাবাদী।
বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতাদের মতে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তাদের আদর্শ ও চিন্তাধারার মৌলিক পার্থক্য রয়েছে, যা ঐক্যের পথে প্রধান বাধা। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফিন্দী বলেন, "দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির জায়গা থেকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট বা সমঝোতার কোনো সম্ভাবনাই আমি দেখি না।" একই সুর শোনা যায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকের কণ্ঠে। তিনি বলেন, "জামায়াত এবং আমাদের চিন্তার পার্থক্যটা বিরাট। মাওলানা মওদুদি সাহেবের যে চিন্তাধারা, তার সঙ্গে ঐতিহ্যগতভাবেই আমাদের চিন্তাধারার পার্থক্য রয়েছে।"
এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, "আমরা চেষ্টা করছি। আরও সময় গেলে আশা করি একটি শক্তিশালী ঐক্য বা সমঝোতা দেখতে পারবেন।" তিনি জানান, আগামী নির্বাচনে সব ইসলামি দলকে নিয়ে একটি বৃহৎ জোট গঠনের জন্য তারা কাজ করছেন এবং এ বিষয়ে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন যত কাছে আসবে, তাদের এই প্রক্রিয়া তত দৃশ্যমান ও সুসংগঠিত হবে।
শোনা যাচ্ছে, চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জামায়াতের সঙ্গে জোটের ব্যাপারে কিছুটা সক্রিয়। অতীতের বৈরিতা ভুলে দুটি দলের মধ্যে বেশ সখ্য গড়ে উঠেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম বলেন, "ঐক্যের জন্য আমরা যে কোনো ছাড় দিতে সব সময় প্রস্তুত। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের অফিশিয়াল কোনো বৈঠক হয়নি।"
বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত ১০টি ইসলামি রাজনৈতিক দল ছাড়াও কয়েকটি অনিবন্ধিত দল রয়েছে। অতীতে বহুবার এসব দলের মধ্যে ঐক্য গড়ার চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন করে এই আলোচনা সামনে এলেও বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, একটি সর্ববৃহৎ জোট গঠন সহজ হবে না।