বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২

জামায়াতকে কোন চোখে দেখবে দিল্লি

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০২:৩০ পিএম

জামায়াতকে কোন চোখে দেখবে দিল্লি

ছবি - সংগৃহীত

আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই ঘোষণার পর থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তাপ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনমুখী কার্যক্রম দিল্লির নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

জামায়াতকে নিয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি এখন কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ।ঐতিহাসিকভাবে ভারত জামায়াতে ইসলামীকে তাদের ইসলামী আদর্শের কারণে রাজনৈতিকভাবে অস্পৃশ্য মনে করে আসছে। এমনকি জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তারা দীর্ঘদিন বিএনপির সঙ্গেও দূরত্ব বজায় রেখেছিল।

তবে বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় জামায়াতের শক্তিবৃদ্ধি স্পষ্ট। বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে তাদের দাপুটে জয় এই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।এই প্রেক্ষাপটে দিল্লিতে কিছু পর্যবেক্ষক মনে করছেন, জামায়াত এখন সম্পূর্ণ নতুন চেহারার একটি দল, যা ‘কার্যত যেন জামায়াত ২.০’!

শ্রীরাধা দত্তের মতো পর্যবেক্ষকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জামায়াতের নবীন প্রজন্মের নেতারা জিনস ও টি-শার্ট পরে টেলিভিশন টক শোতে আসছেন এবং নতুন ধ্যানধারণার কথা বলছেন। তিনি সম্প্রতি ঢাকা সফরে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের সঙ্গে বৈঠকের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, শরিয়া আইন বা ১৯৭১ সালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাহের বলেন যে, তার দল এসব বিষয়ে ক্ষমা চেয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী।তবে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা কিছুতেই মানতে রাজি নন যে জামায়াত তাদের চরিত্র পাল্টাতে পারে। তিনি বলেন, ‘তাদের হাতে আসলে রক্ত লেগে আছে—এটা আমাদের বুঝতে হবে।

’ তিনি জামায়াতকে মুসলিম ব্রাদারহুডের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, ‘চিতাবাঘ যেমন তাদের গায়ের ডোরা বদলায় না, জামায়াতও আসলে কখনোই বদলাবে না।’ শ্রিংলার মতে, জামায়াতের অতীত কর্মকাণ্ডের কারণে ভারত কখনোই তাদের বিশ্বাস করতে পারে না।

তিনি বলেন, তারা মুখে কী বলছে তা শোনা একটি বিষয়, আর বাস্তবে কী করছে তা দেখা আরেকটি বিষয়।সব মিলিয়ে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভারতকে একটি কঠিন সংকট ও প্রবল দ্বিধার মধ্যে ফেলেছে, যা স্পষ্ট।