সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ০৯:৫৫ এএম
ইসলামী জীবনদর্শনে দুনিয়ার জীবনকে ক্ষণস্থায়ী এক খেল-তামাশা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনুল কারিমের সুরা আনআমের ৩১ ও ৩২ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তাআলা এই সত্যকে স্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। এতে বলা হয়েছে, যারা আল্লাহর সাক্ষাতকে মিথ্যা বলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং কিয়ামতের দিন হঠাৎ তাদের সামনে যখন সত্য উন্মোচিত হবে, তখন তারা নিজেদের অবহেলার জন্য আফসোস করবে। সেদিন তারা নিজেদের পাপের বোঝা পিঠে বহন করবে, যা অত্যন্ত নিকৃষ্ট।
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, যারা মৃত্যুর পর পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে, তারা যখন কিয়ামতকে প্রতিষ্ঠিত সত্য হিসেবে দেখবে এবং তাদের পরিণতি সামনে আসবে, তখন দুনিয়ার জীবন হেলায় নষ্ট করার জন্য আফসোস করবে। এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জাহান্নামীরা জান্নাতে তাদের জন্য নির্ধারিত স্থান দেখতে পাবে এবং সেজন্য আক্ষেপ করতে থাকবে।
অন্যদিকে, সুরা আনআমের ৩২ নম্বর আয়াতে দুনিয়ার জীবনের ক্ষণস্থায়িত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দুনিয়ার জীবন খেলাধুলা ও বিনোদন ছাড়া আর কিছুই নয়। মানুষের চোখে দুনিয়ার চাকচিক্য, সম্পদ ও ভোগবিলাস আকর্ষণীয় মনে হলেও, তা দ্রুত বিলীন হয়ে যায়। পক্ষান্তরে, যারা আল্লাহভীতি বা তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহর আদেশ মেনে চলে এবং পাপ থেকে বেঁচে থাকে, তাদের জন্য আখেরাতের আবাসই সর্বোত্তম ও চিরস্থায়ী।
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর একাধিক হাদিস থেকে কিয়ামতের আকস্মিক আগমন সম্পর্কে জানা যায়। তিনি বলেছেন, কিয়ামত এমন আকস্মিকভাবে হবে যে, কোনো ব্যক্তি তার ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করতে পারবে না, খাবার মুখে নেওয়ার সময় পাবে না, কিংবা তার পানীয় পান করতে পারবে না। এসব বর্ণনা প্রমাণ করে যে দুনিয়ার জীবন কত ক্ষণস্থায়ী।
আয়াতের শেষে মহান আল্লাহ প্রশ্ন করেছেন, “তোমরা কি অনুধাবন কর না?” এই প্রশ্নটি মূলত বুদ্ধিমান মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সাজসজ্জায় বিভ্রান্ত না হয়ে চিরস্থায়ী আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। সত্যিকার অর্থে বুদ্ধিমানের কাজ হলো তাকওয়া অবলম্বন করে আখেরাতের জন্য আমল করা।