শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আরেক ফুটবলার

স্পোর্টস ডেস্ক

জুলাই ২৫, ২০২৫, ০৭:১৩ পিএম

প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আরেক ফুটবলার

ছবি- সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ফুটবলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি লিগে খেলা ফুটবলারদের নিয়ে আগ্রহ রীতিমতো তুঙ্গে। বিশেষ করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরীকে ঘিরে এই উত্তেজনা চূড়া স্পর্শ করেছে। ২০১৩ সালে জামাল ভূঁইয়াকে দিয়ে শুরু হয়েছিল প্রবাসী ফুটবলারদের জাতীয় দলে ভেড়ানোর যাত্রা, যা হামজার যোগদানের পর নতুন মাত্রা পেয়েছে। জামাল ভূঁইয়া ছাড়াও এর মধ্যে প্রবাসী ফুটবলার হিসেবে জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন তারিক কাজী, শমিত সোম এবং ফাহামিদুল ইসলাম। এবার আলোচনায় উঠে এসেছেন আরও এক প্রতিভাবান ফুটবলার। তাঁর নাম ফারহান আলী ওয়াহিদ

এত দিন ফুলহামের বয়সভিত্তিক দলে খেলা ফারহান গতকাল (বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই) ক্লাবটির সঙ্গে তার ক্যারিয়ারের প্রথম পেশাদার চুক্তি সম্পন্ন করেছেন। চুক্তি স্বাক্ষরের ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্টও করেছেন ফারহান। এর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের আলোচনার কেন্দ্রে এই তরুণ উইঙ্গার।

লেফট উইংয়ে খেলা ফারহানের জন্ম ইংল্যান্ডে। তাঁর মা–বাবা দুজনেই বাংলাদেশি হলেও তাঁদের জন্মও ইংল্যান্ডে। ফুটবলে ফারহানের যাত্রা শুরু হয় বিখ্যাত ক্লাব চেলসিতে। ২০১৯ সালে চেলসি অনূর্ধ্ব–১২ দল ছেড়ে তিনি ফুলহামে যোগ দেন। এরপর খেলেছেন ফুলহামের অনূর্ধ্ব-১৮ ও অনূর্ধ্ব-২১ দলে। গত মৌসুমে চোটের কারণে কিছুটা ভুগলেও, ফুলহাম অনূর্ধ্ব-১৮ দলের হয়ে ২০ ম্যাচে ৭ গোল এবং ৪টি অ্যাসিস্ট করেছেন, যা তার অসাধারণ প্রতিভা প্রমাণ করে।

গত মৌসুমে ফুলহাম অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে ফারহানের অভিষেক হয়। যেখানে প্রিমিয়ার লিগ ইন্টারন্যাশনাল কাপে পিএসভির বিপক্ষে ৪-৪ গোলে ড্রয়ের ম্যাচে বদলি নেমে তিনি গোলও করেন। এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সই মূলত ফুলহামের সঙ্গে ফারহানের পেশাদার চুক্তির দুয়ার খুলে দেয়।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল ফুলহামের সঙ্গে পেশাদার চুক্তি সই করে ফারহান তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, "এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ফুটবল খেলতে শুরু করার পর থেকেই আমি এই মুহূর্তের জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আর এখন আমি এই পর্যায়ে আছি, অনুভূতিটা অসাধারণ।"

এ সময় ফারহান আরও যোগ করে বলেছেন, "আমি ফুলহামে যোগ দিই অনূর্ধ্ব-১৩ পর্যায়ে। আর এটা রোলারকোস্টারের মতো একটা যাত্রা ছিল। এখানে পুরো পথচলাটা আমি দারুণভাবে উপভোগ করেছি। বয়সভিত্তিক প্রতিটি ধাপে আমার পাশে ভালো এক দল সতীর্থ ছিল, যারা আমাকে শুরু থেকেই আপন করে নিয়েছে। আমার পরিবার সব সময় আমার স্বপ্নপূরণে পাশে থেকেছে। আর এ জন্য তাঁদের অনেক ত্যাগও স্বীকার করেছে। তারা সব সময় আমাকে পরামর্শ দিয়ে বলেছে পা যেন মাটিতে থাকে।"

মা–বাবার বাংলাদেশি পরিচয়ের কারণে সামনের দিনগুলোয় নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের আলোচনায় থাকবেন ফারহান। তবে ফারহান শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। শুরুতে নিশ্চয়ই ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে খেলে নিজের অবস্থান দৃঢ় করার চেষ্টা করবেন তিনি। ২০২০ সালে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব–১৫ দলে ডাক পেলেও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। ক্যারিয়ার এগিয়ে চলার সঙ্গে ফারহান নিশ্চয়ই পারিপার্শ্বিক অবস্থা বুঝে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।