আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম
অর্থনীতিতে স্বস্তির খবর নিয়ে এলো প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ১২ দিনে দেশে এসেছে ১০৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রেমিট্যান্সের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, গত বছরের আগস্ট মাসের প্রথম ১২ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ৭২ কোটি ১০ লাখ ডলার। সে তুলনায় চলতি বছর আলোচ্য সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩৪ শতাংশ। দেশের অর্থনীতিতে যখন ডলারের সরবরাহ নিয়ে আলোচনা চলছে, তখন প্রবাসী আয়ের এই ইতিবাচক ধারা নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক।
এর আগে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে আসে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সরকারের ২.৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা এবং হুন্ডি বন্ধে নেওয়া কঠোর পদক্ষেপের কারণে প্রবাসীরা বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন। এছাড়াও, দেশীয় মুদ্রার বিনিময় হার কিছুটা অনুকূলে থাকায় অনেকেই ডলার বিক্রি করে বেশি টাকা পাচ্ছেন, যা রেমিট্যান্স প্রবাহকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পেয়েছিল, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ২৬.৮ শতাংশ বেশি ছিল। এই ধারাবাহিকতা চলতি অর্থবছরেও বজায় থাকছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জুলাই মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত বিডিবিএল, রাকাব এবং বেসরকারি খাতের কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংকসহ মোট ৮টি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। তবে সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং চ্যানেল দিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ শক্তিশালী রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রেমিট্যান্সের এই শক্তিশালী প্রবাহ দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করছে এবং বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এটি কেবল দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াচ্ছে না, একই সাথে দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় আস্থা ফিরিয়ে আনছে।