আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৭:৪৭ পিএম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার বৈঠক ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আগ্রহ ও জল্পনা চলছে। ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে আলাস্কায় এই শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। উভয় পক্ষই এই আলোচনা থেকে নিজেদের কৌশলগত স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে, যদিও তাদের চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে।
আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, আগামী শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কার এই বৈঠককে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেখা হচ্ছে। এর কারণ, ১৮৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র এই আলাস্কাই রাশিয়ার কাছ থেকে কিনেছিল। আধুনিক বিশ্বে ভূখণ্ড বেচাকেনা বা অদলবদল কল্পনাতীত হলেও, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে এই বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে কিছু দখলকৃত ভূখণ্ড ফেরত আনার চেষ্টা করবেন, তবে এর জন্য 'কিছু বিনিময় বা ভূখণ্ডের অদলবদল' প্রয়োজন হতে পারে।
এই প্রস্তাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কঠোর আপত্তি জানিয়েছেন। তার স্পষ্ট বক্তব্য, ইউক্রেনের কোনো অঞ্চল, বিশেষ করে ক্রিমিয়া, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা মেনে নেওয়া হবে না। জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেছেন, "রাশিয়া যা করেছে, তার জন্য আমরা তাকে পুরস্কৃত করব না।" অন্যদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার অবস্থান থেকে সরে আসেননি। তিনি এখনও দখল করা ভূখণ্ডের স্বীকৃতি, ইউক্রেনের সামরিক নিরপেক্ষতা এবং তার সেনাবাহিনীর আকার সীমিত রাখার মতো শর্তগুলো ধরে রেখেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য হলো ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ করে একটি বড় কূটনৈতিক বিজয় অর্জন করা। এর মাধ্যমে তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেন এবং বিশ্ব মঞ্চে নিজের প্রভাব আরও বাড়াতে পারেন। অন্যদিকে, পুতিনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো দখলকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের স্বীকৃতি আদায় করা এবং ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগ দূর করা।
এসব জটিলতার মাঝে, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা ট্রাম্পের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে চাইছেন। তারা চান না যে ট্রাম্পের কোনো চুক্তিতে কিয়েভের স্বার্থ বিঘ্নিত হোক।