রোহিঙ্গা সংকট: আসিয়ান দূত ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বৈঠক

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায়, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান মালয়েশিয়ায় আসিয়ানের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ওথমান হাশিমের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে দুই পক্ষই রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত ও টেকসই সমাধানে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের পুত্রাজায়ায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সময়, রাষ্ট্রদূত ওথমান হাশিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত মানবিক উদারতার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এটি ইঙ্গিত দেয় যে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থানকে মালয়েশিয়া ও আসিয়ান গুরুত্ব দিচ্ছে।

মালয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

বিস্তারিত পড়ুন

আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বৈঠকে মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং রাখাইন রাজ্যে মানবিক অবস্থার অবনতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা কমে যাওয়া নিয়েও আলোচনা হয়। এটি একটি নতুন সংকট তৈরি করছে, কারণ একদিকে যেমন মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল নয়, অন্যদিকে দাতা দেশগুলোর সহায়তায়ও ভাটা পড়েছে।

ড. খলিলুর রহমান বৈঠকে আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে অনুষ্ঠিতব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন সংলাপ সম্পর্কে মালয়েশিয়ার বিশেষ দূতকে অবহিত করেন। এই সংলাপ রোহিঙ্গা সংকটের বিভিন্ন দিক নিয়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় সাধনে সাহায্য করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া, উভয় কর্মকর্তা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্মেলন নিয়েও মতবিনিময় করেন। তারা আশা প্রকাশ করেন যে এই সম্মেলনটি সংকট সমাধানের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়ক হবে এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত সহায়তা নিশ্চিত করবে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হচ্ছে যে এই সমস্যা শুধুমাত্র দ্বিপক্ষীয় বিষয় নয়, এর সমাধানে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর সমর্থন অপরিহার্য। আসিয়ানের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে মালয়েশিয়ার সঙ্গে এই ধরনের আলোচনা রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ।