আগস্ট ১৩, ২০২৫, ১১:৫৯ এএম
ভারতের হায়দরাবাদে একটি স্বনামধন্য ফার্টিলিটি সেন্টারে সারোগেসির আড়ালে শিশু কেনা-বেচার এক চাঞ্চল্যকর অপরাধচক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। তদন্তে জানা যায়, ইউনিভার্সাল সৃষ্টি ফার্টিলিটি সেন্টার নামে পরিচিত ওই প্রতিষ্ঠানটি নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে গরিব পরিবার বা অবিবাহিত মায়েদের কাছ থেকে কেনা শিশুদের সারোগেট বেবি হিসেবে তুলে দিত।
ঘটনার সূত্রপাত রাজস্থানের এক দম্পতির অভিযোগ থেকে। তারা ডিএনএ পরীক্ষা করে জানতে পারেন, তাদের প্রাপ্ত শিশুটির সঙ্গে কোনো জিনগত মিল নেই। এরপর পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে এই ভয়ঙ্কর অপরাধের তথ্য। জানা গেছে, চক্রটি প্রতি শিশুর জন্য দম্পতিদের কাছ থেকে ১৯ থেকে ৩৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নিত।
তদন্তে আরও জানা যায়, অনেক দম্পতিকে ২২ লাখ টাকা নিয়ে মৃত শিশু দেখানো হয়েছে, আবার কাউকে দেওয়া হয়েছে অকালজাত শিশু। এই প্রতারণার খবর প্রকাশের পর বেশ কিছু ভুক্তভোগী দম্পতি সন্তান ত্যাগ করতে বাধ্য হন, যাদের কয়েকজন এখন সরকারি হোমে রয়েছে।
এই কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ড. আথলুরি নাম্রতা, তার ছেলে ও এক আইনজীবীসহ মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ড. নাম্রতার বিরুদ্ধে হায়দরাবাদ, বিশাখাপত্তনম এবং বিজয়ওয়াড়াসহ একাধিক শহরে অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে। তদন্তে আরও ইঙ্গিত মিলেছে যে, হাওয়ালা চ্যানেলের মাধ্যমে এই চক্র কোটি কোটি টাকার লেনদেন করেছে, যার তদন্ত বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি)-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তেলেঙ্গানা সরকার রাজ্যের সব সারোগেসি ও আইভিএফ সেন্টারের কার্যক্রম পর্যালোচনা করার জন্য একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। এই অমানবিক ঘটনা শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী সারোগেসি শিল্পের ওপরও আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।