আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০১:০৯ পিএম
প্রিয় দর্শক, সুস্বাস্থ্যের সন্ধানে আমাদের আজকের বিশেষ প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত। গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটি এবং বুক জ্বালাপোড়া আমাদের অনেকের জন্যই একটি পরিচিত সমস্যা। এই সমস্যাগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে অস্বস্তিকর করে তোলে এবং খাবারের আনন্দ নষ্ট করে দেয়। আজ আমরা জানবো এই সমস্যাগুলোর কারণ, এর থেকে মুক্তির ৭টি সহজ উপায় এবং কখন দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গ্যাস্ট্রিকের প্রধান কারণ হলো পাকস্থলী থেকে অ্যাসিডের খাদ্যনালীর দিকে উপরের দিকে চলে আসা। কিছু নির্দিষ্ট খাবার, যেমন— অতিরিক্ত তেল ও মশলা যুক্ত খাবার বা কফি খেলে এই সমস্যা বাড়তে পারে। এছাড়া ধূমপান, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ওজন এবং গর্ভবতী হওয়ার কারণেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। হাইয়েটাস হার্নিয়া নামের রোগ এবং অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেনের মতো কিছু নির্দিষ্ট ঔষধ সেবনের ফলেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তবে, কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
প্রথম উপায়, অল্প অল্প করে খাওয়া। একবারে পেট ভরে না খেয়ে সারাদিনে অল্প অল্প করে ভাগ করে খাবার খেতে হবে। এতে হজমের উপর চাপ কম পড়ে।
দ্বিতীয় উপায়, সঠিক সময়ে খাওয়া। খাবারের সময় অনিয়ম করা যাবে না এবং সময় মতো খাবার খেতে হবে। এতে পাকস্থলীর অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তৃতীয় উপায়, নির্দিষ্ট কিছু খাবার এড়িয়ে চলা। যে খাবারগুলো খেলে আপনার বুক জ্বালাপোড়া হয়, শুধুমাত্র সেই খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন। সবার জন্য সব খাবার ক্ষতিকর নাও হতে পারে।
চতুর্থ উপায়, আগে রাতের খাবার সেরে ফেলা। ঘুমানোর অন্তত তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। এতে খাবার হজম হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায় এবং ঘুমানোর সময় অ্যাসিড উপরে উঠে আসার সম্ভাবনা কমে।
পঞ্চম উপায়, শোবার সময় স্বাস্থ্যকর ভঙ্গি অনুসরণ করা। ঘুমানোর সময় মাথা ও বুক কোমরের চেয়ে ১০ থেকে ২০ সেন্টিমিটার উপরে রাখবেন। এর জন্য বালিশ ব্যবহার না করে তোশকের নিচে কিছু দিয়ে খাট উঁচু করে নিতে পারেন।
ষষ্ঠ উপায়, ওজন কমানো। অতিরিক্ত ওজন থাকলে তা কমানোর চেষ্টা করুন। এতে পাকস্থলীর উপর চাপ কমে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝুঁকি কমে।
সপ্তম উপায়, ধূমপান বন্ধ করা। ধূমপান গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। ধূমপান ছেড়ে দিলে এই সমস্যা অনেকাংশেই কমে যায়।
এই সাধারণ উপায়গুলো মেনে চলার পরেও যদি আপনার সমস্যা বারবার দেখা দেয়, আপনার দৈনন্দিন কাজ বাধাগ্রস্ত হয়, অথবা তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে প্রায় প্রতিদিন এই সমস্যা দেখা যায়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদি আপনার বয়স ৫৫ বা তার বেশি হয়, তাহলেও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
এছাড়াও, কিছু মারাত্মক লক্ষণ, যেমন— কোনো চেষ্টা ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া, খাবার গিলতে অসুবিধা হওয়া, বারবার বমি হওয়া, বমি বা পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া, পেটে চাকার মতো কিছু অনুভব করা বা হঠাৎ করে তীব্র পেটব্যথা শুরু হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
মনে রাখবেন, আলসার এবং বুক জ্বালাপোড়া এক নয়, আলসার একটি আলাদা রোগ। তাই সঠিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সুস্থ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে: দিনাজপুরটিভি.কম।