আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০১:০৩ পিএম
প্রিয় দর্শক, সুস্বাস্থ্যের সন্ধানে আমাদের আজকের বিশেষ প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত। চিনি এবং মিষ্টি হলো আমাদের খাদ্যতালিকায় একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন। ডাক্তার ও বিজ্ঞানীরা প্রায়শই সতর্ক করে বলেন যে, অতিরিক্ত চিনি জনস্বাস্থ্যের জন্য এক নম্বর শত্রু। কিন্তু এর পেছনে আসল কারণ কী? আজ আমরা চিনি ও মিষ্টি সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণা এবং এর স্বাস্থ্যগত প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
অনেকেরই ধারণা, বেশি মিষ্টি খেলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে, ভিডিওতে বলা হয়েছে যে শুধুমাত্র চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবারের কারণেই স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়, এমনটা বলা যায় না। কারণ অতিরিক্ত চিনি স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, এটা প্রমাণ করা কঠিন। তবে এটা সত্য যে, চিনি থেকে প্রাপ্ত অতিরিক্ত ক্যালোরি ডায়াবেটিস, স্থূলতা এবং উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে। সুগার বা চিনি হলো সেই উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের একটি অংশ মাত্র। ভিডিওতে আরও বলা হয়েছে যে, শুধুমাত্র অতিরিক্ত মিষ্টি বা শর্করা জাতীয় খাবারই ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী নয়, কিছু জেনেটিক এবং পরিবেশগত কারণও এর জন্য দায়ী।
উচ্চমাত্রার ফ্রুকটোজ সমৃদ্ধ কর্ন সিরাপ বা অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয়, জুস ড্রিংক, মধু বা সাদা চিনি হৃদপিণ্ডের সমস্যা তৈরি করতে পারে। এগুলো ধমনীর ভেতরে ট্রাইগ্লিসারাইড নামক চর্বি জমতে সাহায্য করে, যার ফলে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবারে প্রচুর ক্যালোরি থাকে। যেকোনো উপায়ে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করলে ওজন বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে, স্থূলতার জন্য মিষ্টি খাবারের ভূমিকা থাকলেও, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে মিষ্টি জাতীয় খাবার স্থূলতার কারণ নাও হতে পারে। ভিডিওতে এও বলা হয়েছে যে, মিষ্টি খেলে বাচ্চারা হাইপারঅ্যাকটিভ হয়—এমন ধারণার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
মিষ্টি খাওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার প্রয়োজন নেই, বরং কতটা পরিমাণে মিষ্টি খাওয়া উচিত তা জানা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিটি মানুষের জন্য সুষম খাদ্যের সংজ্ঞা ভিন্ন হতে পারে। সাদা চিনি হোক বা লাল চিনি হোক, সব ধরনের চিনিই শরীরে একই প্রভাব ফেলে। তাই, অতিরিক্ত মিষ্টি না খেয়ে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া সবচেয়ে ভালো সমাধান। অতিরিক্ত কৃত্রিম সুইটনার গ্রহণ করলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই চিনিযুক্ত পানীয়ের পরিবর্তে পানি পান করা একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস।
পরিশেষে, মিষ্টি বা চিনিকে আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় শত্রু মনে করার দরকার নেই। এটি আমাদের খাদ্যতালিকায় একটি অংশ হতে পারে, কিন্তু পরিমিত পরিমাণে। একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে এবং অতিরিক্ত চিনি গ্রহণের ঝুঁকি থেকে আমাদের রক্ষা করবে।
সুস্থ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে: দিনাজপুরটিভি.কম।