আগস্ট ১৩, ২০২৫, ১২:১১ পিএম
ভূরাজনৈতিক মতবিরোধের জেরে তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক থেকে ধীরে ধীরে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে ভারত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বয়কট তুরস্ক’ ট্রেন্ড হওয়ার পর এই প্রবণতা আরও বেড়েছে, যা পর্যটন, শিক্ষা ও বিমান পরিবহন খাতে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তুরস্কের পাকিস্তান সমর্থন এবং ড্রোন সরবরাহসহ বিভিন্ন কারণে ভারতীয়দের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ জমছিল।
সরকারি ও ইন্ডাস্ট্রির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন মাসে যেখানে ভারত থেকে ৩৮,৩০৭ জন পর্যটক তুরস্কে গিয়েছিলেন, সেখানে ২০২৫ সালের জুনে এই সংখ্যা নেমে এসেছে ২৪,২৫০ জনে। এক বছরের ব্যবধানে এই পর্যটকের সংখ্যা কমেছে প্রায় ৩৭%। শুধু কলকাতার পুজো মৌসুমেই প্রায় ১,৫০০ ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল হয়েছে, যার ফলে তুরস্কের অন্তত ৬০-৭৫ কোটি টাকা সম্ভাব্য আয় কমেছে। ভারতীয়দের এই ‘হাই-এন্ড’ পর্যটন সেগমেন্টের বুকিং ঝরে পড়ায় তুরস্কের পর্যটন খাত বড় আঘাত পেয়েছে।
পর্যটনের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রেও ভারত সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে। দিল্লি ও মুম্বাইয়ের কিছু নামী বিশ্ববিদ্যালয় তুরস্কের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে থাকা সমঝোতা ও ছাত্রবিনিময় কর্মসূচি স্থগিত বা বাতিল করেছে। কারণ হিসেবে ‘বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও জাতীয় স্বার্থ’কে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে তুরস্কগামী ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ ও ভিসা প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সবচেয়ে কঠোর বার্তা এসেছে বিমান পরিবহন খাত থেকে। একাধিক ভারতীয় বিমানবন্দরে কাজ করা তুর্কি মালিকানাধীন গ্রাউন্ড-হ্যান্ডলিং সংস্থার নিরাপত্তা অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নকে সামনে এনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শিল্পমহলের মতে, এটি একটি স্পষ্ট ‘মার্কেট-সিগন্যাল’ যে, কোনো দেশের অবস্থান ভারতের মূল স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলে ভারত তার বৃহৎ ভোক্তা ও যাত্রীশক্তিকে নীরব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।