আগস্ট ৩, ২০২৫, ১০:০০ এএম
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের অতর্কিত হামলার পর থেকেই গাজায় ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযান চলছে। দীর্ঘ প্রায় ১৫ মাসের এই অভিযানে গাজা উপত্যকা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। মাঝে স্বল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গত মার্চ মাস থেকে আবারও পূর্ণোদ্যমে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এই দীর্ঘ সময়ে হতাহতের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে আন্তর্জাতিক চাপ। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-এর মতো সংস্থাগুলোতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আবারও গাজায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ার খবর পাওয়া গেল।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০৭৯ জন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত মোট ৬০ হাজার ৪৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার (২ আগস্ট) একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় যে ৯৮ জনের মৃতদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। এর ফলে আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭২২ জনে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এখনও অনেক ভুক্তভোগী ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়েও ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চলছে। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ত্রাণসামগ্রী নিতে গিয়ে ৩৯ জন নিহত এবং ৮৪৯ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৪২২ জনে পৌঁছেছে।
গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করে। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই অভিযানে গাজার বেশিরভাগ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। একই সাথে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও রয়েছে ইসরায়েল। তবে এসব চাপ সত্ত্বেও গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা এখনও অব্যাহত রয়েছে।