সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

পুণ্য ও পাপের পরিচয়: হাদিসে যা বলেছেন মহানবী (সা.)

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১১, ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম

পুণ্য ও পাপের পরিচয়: হাদিসে যা বলেছেন মহানবী (সা.)

ছবি-দিনাজপুর টিভি

মানুষের স্বভাবগত কারণেই পাপের প্রতি এক ধরনের আকর্ষণ থাকে। ইসলাম ধর্ম মানুষকে এই আকর্ষণ থেকে দূরে থেকে নেক কাজ বা পুণ্য অর্জনে উৎসাহিত করে। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে বারবার মানুষকে সৎকাজে প্রতিযোগিতা করতে এবং পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। পরকালের ভালো-মন্দ নির্ভর করে এই পাপ-পুণ্যের ওপর। তাই পাপ-পুণ্যের সঠিক পরিচয় জানা প্রতিটি মুসলিমের জন্য অত্যন্ত জরুরি। রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিসে এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

ইসলামে নেক আমল ও পাপের সংজ্ঞা খুবই গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ। মহানবী (সা.) তাঁর হাদিসে এই দুটি বিষয়কে অত্যন্ত সহজ ও সাবলীলভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, যা আমাদের অন্তরকে সঠিক পথের দিশা দেয়।

হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “জাহান্নামকে ঘিরে রাখা হয়েছে আকর্ষণীয় কাজকর্ম দিয়ে আর জান্নাতকে ঘিরে রাখা হয়েছে নিরস কাজকর্ম দিয়ে।” (বুখারি, হাদিস: ২৪৫৫)। এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, নেক কাজ করতে কষ্ট হলেও এর ফল উত্তম।

পুণ্য ও পাপের সংজ্ঞা প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি হাদিসে বলেছেন: “বির বা সৎকাজ হচ্ছে, সচ্চরিত্রতা। আর পাপ হচ্ছে, যা তোমার অন্তরে উদিত হয় অথচ তুমি চাও না যে, মানুষ সেটা জানুক।” (মুসলিম, হাদিস: ২৫৫৩)। এই হাদিসটিতে পাপের একটি প্রধান লক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে, যা হলো গোপনীয়তা বা মানুষের সামনে প্রকাশ করতে না পারার মানসিকতা।

আরেকটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: “বির বা সৎকাজ হচ্ছে, যাতে অন্তর শান্ত হয়, চিত্তে প্রশান্তি লাভ হয়। আর পাপ হচ্ছে, যাতে অন্তর শান্ত হয় না এবং চিত্তেও প্রশান্তি লাভ হয় না, যদিও ফতোয়াপ্রদানকারীরা তোমাকে ফতোয়া দিয়ে থাকুক।” (মুসনাদে আহমাদ: ৪/১৯৪)। এই হাদিসটিতে পাপ ও পুণ্যের একটি অভ্যন্তরীণ বা আত্মিক সংজ্ঞার কথা বলা হয়েছে, যেখানে মনের প্রশান্তিকেই প্রধান মাপকাঠি হিসেবে ধরা হয়েছে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা সৎকাজের প্রতি দ্রুত অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন: “আর তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, যা মুত্তাকীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৩-১৩৪)।

এসব হাদিস ও কোরআনের আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারি, মানুষের স্বভাব, সমাজের চোখে ভালো হওয়া এবং মনের শান্তি, এই তিনের সমন্বয়েই পুণ্য ও পাপের পরিচয় নির্ধারিত হয়।