সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

হাসিমুখে থাকা ইবাদত: যে হাসিতে পাবেন পরকালের সওয়াব

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১১, ২০২৫, ১০:০৮ এএম

হাসিমুখে থাকা ইবাদত: যে হাসিতে পাবেন পরকালের সওয়াব

ছবি-দিনাজপুর টিভি

মানুষের জীবনে হাসি হলো সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য ও আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ। একটি হাসি যেমন মনোকষ্ট দূর করে, তেমনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মনোবল বৃদ্ধি করে। ইসলামে হাসি ও প্রফুল্লতাকে কেবল একটি স্বাভাবিক মানবীয় বৈশিষ্ট্য হিসেবে দেখা হয় না, বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হিসেবে বিবেচিত হয়। হাসিমুখে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাকে রাসুলুল্লাহ (সা.) সদকা বা দান হিসেবে গণ্য করেছেন, যা আমাদের আমলনামাকে সমৃদ্ধ করতে পারে।

মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি সাধারণ কাজ, মুচকি হাসি—ইসলামে যা পরকালীন সওয়াব অর্জনের এক সহজ মাধ্যম। নবীজির (সা.) সুন্নাহ অনুযায়ী, অন্যের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাও একটি ইবাদত। সম্প্রতি এক নিবন্ধে এই তথ্য উঠে এসেছে।

নবীজি (সা.) সবসময় হাস্যোজ্জ্বল থাকতেন এবং অন্যদেরও প্রফুল্ল থাকতে উৎসাহিত করতেন। তিরমিজি শরিফের একটি হাদিসে তিনি ইরশাদ করেন, ‘অপরের সঙ্গে সাক্ষাতে মুচকি হাসাও একটি সদকা।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৯৫৬)। এই সামান্য আমলটি আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ককে মজবুত করে এবং ভালোবাসা বৃদ্ধি করে।

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে, হাসিমুখে কথা বলা বা আচরণ করা ছোট আমল মনে হলেও এর গুরুত্ব অনেক। সহিহ মুসলিমের একটি হাদিসে বলা হয়েছে, ‘তোমরা কোনো ভালো কাজকেই তুচ্ছ ভেবো না; যদি সেটা তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে দেখা করাও হয়।’ (সহিহ মুসলিম: ২৬২৬)। এটি প্রমাণ করে যে, ছোট ছোট নেক আমলও নাজাতের উসিলা হতে পারে।

এছাড়া, কারো প্রতি অবজ্ঞাভরে মুখ গোমড়া করে রাখা বা অহংকার প্রকাশ করা নিন্দনীয়। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি মানুষের প্রতি অবজ্ঞাভরে গাল ফুলিয়ো না এবং জমিনে উদ্ধতভাবে বিচরণ করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা কোনো অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা লুকমান: ১৮)। এর বিপরীতে মুচকি হাসি যেমন সম্পর্ককে উন্নত করে, তেমনি তা মানুষের চরিত্রের কোমলতা ও সৌন্দর্যবোধকে প্রকাশ করে।

অবশ্য, হাস্যরস বা মজা করার ক্ষেত্রে মিথ্যা কথা বলে কাউকে হাসানো ইসলামে নিষিদ্ধ। নবীজি (সা.) বলেন, ‘ধ্বংস ওই ব্যক্তির জন্য, যে মিথ্যা কথা বলে মানুষ হাসায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৯০)। সুতরাং, আন্তরিক ও পবিত্র উদ্দেশ্য নিয়ে করা হাসিই সওয়াবের কারণ হবে।

হযরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘নবীজি যখনই আমার দিকে তাকাতেন, তখনই মুচকি হাসতেন।’ (সহিহ বুখারি: ৩০৩৫)। এই বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, হাসিমুখে থাকা নবীজির (সা.) একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস ছিল। এর মাধ্যমে তিনি মানুষের কষ্ট লাঘব করতেন এবং তাদের মনে প্রশান্তি আনতেন, যা একটি বড় ইবাদত।