সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ১১:০৯ এএম
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী অক্টোবর মাসে দক্ষিণ কোরিয়া সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সিএনএন-এর তথ্য অনুযায়ী, এই সফরে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করতে পারেন। ট্রাম্প প্রশাসনের তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তা এই খবর নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্প এবং তার উপদেষ্টারা দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়াংজু শহরে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন (অ্যাপেক) বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এই সম্মেলন অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মকর্তারা আরও জানান, এই সম্মেলনের ফাঁকে শি জিনপিং এবং ট্রাম্পের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা চলছে, তবে এটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। গত মাসে শি জিনপিং ট্রাম্প ও তার স্ত্রীকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান। এর জবাবে ট্রাম্পও শি-কে পাল্টা আমন্ত্রণ জানান, যদিও সফরের কোনো তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, "দক্ষিণ কোরিয়া সফরের মূল উদ্দেশ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করা।" তবে এই সফর বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা এবং অসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনার সুযোগ তৈরি করতে পারে।
এই সফরকে ঘিরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গেও ট্রাম্পের বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং ট্রাম্পকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর সময় এ ধরনের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্পও কিমের সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি তা করব এবং আমরা আলাপ করব। উনি আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। আমরা তার সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় আছি, আর সম্পর্ককে আরো ভালো করব।”
শি এবং কিম—উভয়ের সঙ্গেই ট্রাম্পের সম্পর্ক এখন এক সূক্ষ্ম পর্যায়ে রয়েছে। সম্প্রতি বেইজিংয়ে শি জিনপিং, কিম জং উন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিলে ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই আয়োজনকে কটাক্ষ করেন। তিনি মন্তব্য করেন যে, চীন, রাশিয়া এবং ভারত যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ‘ষড়যন্ত্র’ করছে।
বর্তমানে মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধও উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। গত এপ্রিলে ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫% শুল্ক আরোপ করলে চীনও পাল্টা ১২৫% শুল্ক বসায়। পরে ট্রাম্প নভেম্বর পর্যন্ত বাড়তি শুল্ক কার্যকর না করার সিদ্ধান্ত নেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গিয়াংজু সম্মেলন ট্রাম্প-শি বৈঠকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হতে পারে, এবং কিম জং উনের উপস্থিতি এই বৈঠককে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলবে।