মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২

জাতীয় পার্টি কি নিষিদ্ধ হচ্ছে, নুরের ওপর হামলার পর প্রশ্ন জাহেদ উর রহমানের

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ৩০, ২০২৫, ১১:৫৯ এএম

জাতীয় পার্টি কি নিষিদ্ধ হচ্ছে, নুরের ওপর হামলার পর প্রশ্ন জাহেদ উর রহমানের

ছবি - সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের প্রধান নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনাকে দেশের রাজনৈতিক মহলে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। এই ঘটনায় নুর মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই এই হামলার জন্য দায়ী। যদিও ভিডিও ফুটেজে বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার নয়, দলের অন্য নেতাদের বক্তব্য থেকে ঘটনাটি সত্য বলেই মনে হয়। এ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান তার ইউটিউব চ্যানেলে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

তিনি বলেন, এই হামলাকে কেবল একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখলে ভুল হবে। এর পেছনে একটি সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। জাহেদ উর রহমানের মতে, এই হামলার মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার একটি পরিকল্পিত প্রক্রিয়া শুরু করা হতে পারে। নুরের ওপর হামলার পর থেকে এনসিপি এবং গণ অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে এই দাবি আরও জোরালো করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, "আমরা নুরের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনা নতুন নয়। শেখ হাসিনার আমলে পুলিশ বাহিনী অনেকটাই 'মিলিটারাইজড' হয়ে গেছে। তবে নিয়মিতভাবে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামানো কোনো সুস্থ দৃষ্টান্ত নয়। সেনাবাহিনীর মূল প্রশিক্ষণ যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য, জনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নয়। ফলে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে থাকার কারণে তাদের প্রশিক্ষণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং কিছু সদস্যের মধ্যে দুর্নীতির প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে।"

তিনি বলেন, "যদি সত্যি কোনো উস্কানি ছাড়াই নুরের ওপর হামলা করা হয়ে থাকে, তাহলে সেটি একটি ভয়াবহ অন্যায়। এই ঘটনার একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং দ্রুত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।"

জাহেদ উর রহমান আরও বলেন, এই ঘটনার পর জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে। জাতীয় পার্টির অফিসের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়। তিনি মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ রাজনৈতিকভাবে উসকানিমূলক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। যেহেতু জাতীয় পার্টি এখনও একটি বৈধ রাজনৈতিক দল, তাদের অফিস রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তবে গণ অধিকার পরিষদের এই পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করার পটভূমি তৈরি করেছে বলেই তার মনে হয়।

জাহেদ উর রহমান জানান, জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার এই তৎপরতা একটি স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়। বরং এটি পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনী পরিবেশকে আরও জটিল করে তুলছে। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকলে কিছু আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে, এমনকি নির্দলীয় প্রার্থীদের মাধ্যমে কিছু জায়গায় জয়ীও হতে পারে। জামায়াত এবং এনসিপি যদি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে মাঠে কেবল বিএনপি এবং তাদের মিত্ররা থাকবে, যারা এককভাবে নির্বাচনে গেলে সেটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। সেই সুযোগটি কাজে লাগাতেই হয়তো জাতীয় পার্টিকে সরানোর এই প্রচেষ্টা চলছে।

সবশেষে তিনি বলেন, "আমরা যারা চাই দেশ অস্থিরতার দিকে না যাক, তাদের উচিত এখনই এই পরিস্থিতি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা। নির্বাচন বানচাল বা পিছিয়ে দেওয়ার যেকোনো উদ্যোগকে প্রতিহত করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সত্য উদঘাটন, ন্যায়বিচার এবং রাজনৈতিক সংযম।