বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২

জামায়াত মুক্তিযোদ্ধা হলেও সমর্থন করতেন না: জাহেদ উর রহমান

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১১:১৯ এএম

জামায়াত মুক্তিযোদ্ধা হলেও সমর্থন করতেন না: জাহেদ উর রহমান

ছবি - সংগৃহীত

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান তার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতি তার সমালোচনার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, জামায়াত যদি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশও নিত, তবুও তিনি তাদের বর্তমান রাজনীতিকে সমর্থন করতেন না। তার এই মন্তব্যটি মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘অনেকেই জানতে চান যে আমি কেন জামায়াতের মতো একটি দলকে সমর্থন করি না, যখন তারা এত ভালো। আমি মনে করি এই প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু যদি আমরা ধরেও নিই যে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল, তবুও আমি তাদের আজকের রাজনীতি সমর্থন করতাম না।’ তিনি আরও বলেন, জামায়াতের প্রতি তার কোনো ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নেই, বরং তিনি যেকোনো ধর্মভিত্তিক দলের রাজনীতির বিরোধী।

তিনি ধর্মভিত্তিক বা আইডেন্টিটি পলিটিক্সের সমালোচনা করে বলেন, ‘যখন আপনি ভালো আছেন বলে ঘাড় ধরে আমাকে সেই ভালোটা মানাতে চাইবেন, তখন তা ফ্যাসিবাদে পরিণত হয়। একটি দল কোনো একটি নির্বাচনে জয়ী হওয়া মানেই যে তারা সবসময় সঠিক, তা নয়। গণতন্ত্রে অনেক সময় ভুল মানুষ নির্বাচিত হয়, এবং বর্তমান বৈশ্বিক প্রবণতাও সেদিকেই যাচ্ছে।’

জাহেদ উর রহমান বলেন, তিনি যেকোনো ধরনের আইডেন্টিটি পলিটিক্সকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। জামায়াত ইসলাম ও শরিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠার কথা বলে ধর্মভিত্তিক আইডেন্টিটি পলিটিক্স করছে। তিনি বলেন, ইসলাম ধর্ম এবং ইসলামিজম একই জিনিস নয়। যখন রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক পরিচয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়, তখন নতুন নতুন বিভেদ তৈরি হয়। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে ধর্মভিত্তিক দেশভাগের পরও দুই পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন জামায়াতকে ইসলামের শত্রু মনে করে। হেফাজতে ইসলামের আমির বলেছেন, জামায়াতের সঙ্গে থাকলে ঈমান থাকবে না। এর অর্থ হলো ইসলামের মধ্যেও বিভিন্ন ব্যাখ্যা এবং উপদল তৈরি হচ্ছে, যা ক্রমাগত মানুষের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করে।’

তার মতে, যখন রাজনীতিতে ভোটের হিসাব জড়িত হয়, তখন দলগুলো মানুষকে উসকে দিয়ে নতুন নতুন পরিচয় তৈরি করার চেষ্টা করে, যা সমাজে সংকট তৈরি করে।