রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

মাইলস্টোন ট্রাজেডি: আইমান নামে আরও এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৫, ২০২৫, ১১:৪৪ এএম

মাইলস্টোন ট্রাজেডি: আইমান নামে আরও এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি- সংগৃহীত

গত সোমবার (২১ জুলাই) রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকেই শোক আর আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছে। এটি দেশের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ সামরিক বিমান দুর্ঘটনা, যেখানে বেশিরভাগ হতাহতই শিশু। অগ্নিদগ্ধ শিক্ষার্থীদের অনেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর থেকেই প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, যা সাধারণ মানুষের মনে গভীর বেদনার সৃষ্টি করছে।

রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ আইমান (১০) নামে আরও এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টায় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আইমানের শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। এই নতুন মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৫ জনে।



 

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক প্রফেসর ডা. মারুফুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ বছর বয়সী শিশু আইমানের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে ৪১ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন, যাদের মধ্যে ৬ জন চরম আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়াও অন্তত ১৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অনেক শিশুর শরীরের ৩০ শতাংশের বেশি পোড়া থাকায় তাদেরও শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।

ডা. মারুফুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসকরা দিনরাত কাজ করছেন এবং বিদেশি ডাক্তাররাও তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ভারত থেকে প্রতিনিধি দল এসেছে, চীন থেকে পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল বৃহস্পতিবার রাতে পৌঁছেছে এবং সিঙ্গাপুর থেকে মোট ৫ জনের দুটি চিকিৎসক টিম আসার কথা রয়েছে। তিনি জানান, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়া গেছে এবং বাংলাদেশের অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। তিনি আশ্বস্ত করেন, জাতীয় বার্নে বিশ্বমানের চিকিৎসক রয়েছেন।

 

তিনি আরও জানান, এই মুহূর্তে রক্তের কোনো প্রয়োজন নেই এবং স্কিন ডোনেশনও আপাতত নেওয়া হচ্ছে না। চিকিৎসা সংক্রান্ত সব খরচ সরকার বহন করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৩ জুলাই) আইএসপিআর ৩২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে। এরপর বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। আজ নতুন করে আইমানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৫-এ পৌঁছালো।

এদিকে, সন্তানের মৃত্যুতে আইমানের বাবা ইসমাইল হোসেন বাপ্পি বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন। শরীয়তপুরের গ্রামের বাড়ি হলেও পরিবার নিয়ে তারা উত্তরায় থাকতেন। একমাত্র কন্যাকে হারিয়ে পুরো পরিবার শোকে মুহ্যমান, হাসপাতালে স্বজনদের আর্তচিৎকারে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।