রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

খালি পেটে অরেঞ্জ জুস খেলে যা ঘটে – জানলে অবাক হবেন!

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৭, ২০২৫, ১১:৫৪ এএম

খালি পেটে অরেঞ্জ জুস খেলে যা ঘটে – জানলে অবাক হবেন!

ছবি- সংগৃহীত

সকালের নাস্তায় এক গ্লাস ফলের জুস পান করা অনেকের কাছেই একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। তবে সব স্বাস্থ্যকর খাবার সব সময় বা সব পরিস্থিতিতে উপকারী হয় না। অরেঞ্জ জুসের মতো একটি জনপ্রিয় পানীয়ের ক্ষেত্রেও এমন কিছু নিয়ম আছে। খালি পেটে এটি পান করার ফলে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন সময়ে সতর্ক করেছেন। এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া জরুরি, যাতে আমরা স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো সঠিকভাবে মেনে চলতে পারি।

সকালের নাস্তায় এক গ্লাস অরেঞ্জ জুস অনেকের কাছেই স্বাস্থ্যের প্রতীক। কিন্তু খালি পেটে এই মিষ্টি টক পানীয়টি পান করা কি সত্যিই ভালো? বিশেষ করে পেটের স্বাস্থ্য বা ‘গাট হেলথ’-এর ওপর এর কী প্রভাব পড়ে? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা গেল।

 

ভারতীয় চিকিৎসক ড. সোনালি গৌতম বলেন, “অরেঞ্জ জুসে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে। এগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, শরীরের প্রদাহ কমাতে এবং হজমের জন্য উপকারী ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে।”

তবে এই উপকারিতার পাশাপাশি কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। খালি পেটে অরেঞ্জ জুস খেলে কিছু ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে:

১. খালি পেটে খেলে পেটে সমস্যা: অরেঞ্জ জুসের উচ্চ অ্যাসিডিক প্রভাব অনেকের পেটে সমস্যা তৈরি করতে পারে। খালি পেটে খেলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা গ্যাস্ট্রাইটিসের মতো সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে যাদের পেট আগে থেকেই সংবেদনশীল।

২. রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়: এক গ্লাস অরেঞ্জ জুসে প্রায় ২০-২৫ গ্রাম চিনি থাকে, কিন্তু ফাইবার থাকে না। ফলে এই চিনি দ্রুত শরীরে শোষিত হয়ে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

৩. দাঁতের ক্ষতি: অরেঞ্জ জুসে থাকা অ্যাসিড ও চিনি একসাথে দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, জুস খাওয়ার পর একটু পানি দিয়ে কুলকুচি করা বা স্ট্র দিয়ে পান করা ভালো — এতে দাঁতের ক্ষতি কম হয়।

তাহলে কীভাবে খেলে উপকার পাওয়া যায়? বিশেষজ্ঞদের মতে, খালি পেটে নয়, বরং নাস্তার সঙ্গে অরেঞ্জ জুস পান করা উচিত, যেমন ওটস বা ফাইবারযুক্ত খাবারের সাথে। এতে শরীরের আয়রন শোষণ ভালো হয় এবং রক্তে চিনির পরিমাণ হঠাৎ বাড়ে না। সবচেয়ে ভালো হলো সরাসরি কমলা ফল খাওয়া, কারণ এতে ফাইবার পাওয়া যায়, যা পেট পরিষ্কার রাখতে এবং গাট ব্যাকটেরিয়াকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।

আপনি যদি প্রতিদিন সকালে ভালো কিছু দিয়ে দিন শুরু করতে চান, তাহলে এক গ্লাস পানি খাওয়ার পর ফল খান। এরপর নাস্তার সঙ্গে অল্প পরিমাণ অরেঞ্জ জুস নিতে পারেন। তবে খালি পেটে নয়, আর চিনি-মেশানো বা প্যাকেটজাত জুস নয় — শুধু ১০০% বিশুদ্ধ, সংরক্ষণহীন জুস পান করুন।