রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

নিম্নচাপ ও জোয়ারের প্রভাবে ফেনীর সোনাগাজীর ১১ গ্রাম প্লাবিত

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৭, ২০২৫, ১১:১৫ এএম

নিম্নচাপ ও জোয়ারের প্রভাবে ফেনীর সোনাগাজীর ১১ গ্রাম প্লাবিত

ছবি- সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি এবং অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার অন্তত ১১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছোট ফেনী নদীর পানি কয়েক ফুট বেড়ে গিয়ে তীরবর্তী গ্রামগুলোর অনেক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও সড়ক ডুবে গেছে।

গতকাল শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ফেনী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতায় প্রবেশ করায় নদীতীরবর্তী সায়েদপুর, চর ইঞ্জিমান, মাদরাসা পাড়া, আমতলী, ইতালি মার্কেট, রহমতপুর, তেল্লার ঘাট, কাজীর হাট সহ বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, "মুছাপুর রেগুলেটর না থাকায় প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। ঘরবাড়ি, জমি, মাছের ঘের সবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু শনিবারের জোয়ার ছিল অস্বাভাবিক। একটি টেকসই রেগুলেটর নির্মাণ না হলে এ জনপদে ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সামনে ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে।"

এদিকে, জোয়ারের নোনাপানিতে এসব এলাকার কৃষিজমি ও মৎস্য ঘের হুমকিতে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এসব এলাকার প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে। স্থানীয় মৎস্যচাষি আবু রায়হান বলেন, "যখন-তখন জোয়ারের নোনাপানি ঢোকায় মৎস্য খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। বর্ষায় পানি আরও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় মাছের ঘের বা ফসলি জমিতে বিনিয়োগ করলে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি।"

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন আহমেদ সোহাগ বলেন, "জোয়ারের পানি নদী হয়ে খালে প্রবেশ করে চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, বগাদানা ও চর মজলিশপুর এলাকার কৃষি জমি প্লাবিত হয়েছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি এসব এলাকায় চাষাবাদ না করে উঁচু জমিতে ফসল আবাদ করতে।" জেলা কৃষি বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছেন।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, "শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৬৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে রবিবারও জেলাজুড়ে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।"

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পুর) মো. আবু মুসা রকি বলেন, "আমরা স্লুইস গেটসহ প্লাবিত অঞ্চলগুলো পর্যবেক্ষণ করছি। সেখানে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ১৪৬ মিটার। অমাবস্যায় এমনিতেই পানি বাড়ে, তার মধ্যে রেগুলেটর না থাকায় সাগরের পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এর ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।"