জুলাই ২৮, ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম
নেত্রকোনায় এক কিশোরীকে (১৫) ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার দায়ে তিন যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার (২৮ জুলাই) বেলা তিনটার দিকে নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম এমদাদুল হক এই রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) নুরুল কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রায় ঘোষণার সময় তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন:
-
অপু চন্দ্র সরকার (২০), কাজল সরকারের ছেলে, ঠাকুরাকোনা, নেত্রকোনা সদর উপজেলা। (তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কৃষিবিষয়ক উপসম্পাদক ছিলেন)।
-
মামুন আকন্দ (২৫), গফুর মিয়ার ছেলে।
-
সুলতান মিয়া (২২), মৃত চান মিয়ার ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ওই তিন তরুণ স্থানীয় এক দরিদ্র রিকশাচালকের মেয়েকে পাশের একটি মাছের খামারের ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ওই দিন দিবাগত রাত আটটার দিকে মেয়েটির মা সেখানে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একজন মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেন। পরদিন ঘটনাটি জানাজানি হলে কিশোরী নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনায় প্রথমে নেত্রকোনা মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। পরে ওই কিশোরীর মা অভিযোগ করেন, থানায় ধর্ষণ মামলা দিতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি, বরং গালমন্দ করে তাঁকে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নেত্রকোণায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমীর তৈমুরকে প্রত্যাহার করা হয়। পরে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে ধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করেন।
আদালতের নির্দেশে পুনরায় লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর পুলিশ তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এবং তাঁরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আজ এই রায় দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন: