বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

মানব পাচারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল বাংলাদেশ

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ৩০, ২০২৫, ০২:১২ পিএম

মানব পাচারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল বাংলাদেশ

ছবি- সংগৃহীত

মানব পাচার একটি জঘন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ, যা বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বাংলাদেশ সরকার এই অপরাধ দমনে শুরু থেকেই কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। প্রতি বছর ৩০ জুলাই বিশ্ব মানব পাচার বিরোধী দিবস পালিত হয়, যা এই ভয়াবহ অপরাধের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। এই দিবসের প্রাক্কালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মানব পাচার দমনে তাদের অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

মানব পাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশে অভিবাসন বিষয়ক জাতিসংঘ নেটওয়ার্ক (বিডিইউএনএনএম) আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ে বিশ্ব মানব পাচার বিরোধী দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মাহাবুবুর রহমান বলেন, মানব পাচার একটি সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক অপরাধ। এর সঙ্গে জড়িত চক্রগুলোকে চিহ্নিত করে ভেঙে দিতে হবে। এই অপরাধ প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ প্রণয়ন করেছি এবং ২০১৭ সালে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিধিমালা প্রণয়ন করেছি। বাংলাদেশ ২০১৯ সালে জাতিসংঘের মানব পাচার প্রতিরোধ বিষয়ক প্রটোকলে অনুসমর্থন দিয়ে তার আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সরকার মানব পাচার প্রতিরোধ আইনকে আরও কার্যকর করতে কাজ করছে। একইসঙ্গে ‘জাতীয় মানব পাচার প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষ’ গঠনের পাশাপাশি ‘মানব পাচার প্রতিরোধ তহবিল’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং বাজেট বরাদ্দের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ২০২৬–৩০ সময়কালের জন্য চতুর্থ জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এছাড়া বিভাগীয় পর্যায়ে সাতটি মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে এসব ট্রাইব্যুনাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, একটি জাতীয় রেফারেল ব্যবস্থা গঠনের কাজ চলছে, যাতে পাচার থেকে ফিরে আসা ভুক্তভোগীরা পূর্ণ সহযোগিতা, সেবা ও পুনর্বাসনের সুযোগ পান। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলার মাধ্যমে তদন্ত, বিচার ও সাক্ষী সুরক্ষার বিষয়েও নজর দেওয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন— বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ইমিগ্রেশন, স্পেশাল ব্রাঞ্চ) মো. আসাদ উল্লাহ চৌধুরী, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের উপসচিব (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) ড. আবুল হাসনাত, কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সুজিন কং, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশন টু বাংলাদেশের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. বার্ন্ড স্প্যানিয়ার, জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থার বাংলাদেশ মিশনের প্রধান ল্যান্স বোনো প্রমুখ।