শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

বিশেষ ট্রেনে ঢাকার পথে ময়মনসিংহ জামায়াত: সোহরাওয়ার্দী মুখী হাজারো নেতাকর্মী

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ১৯, ২০২৫, ১২:২৮ পিএম

বিশেষ ট্রেনে ঢাকার পথে ময়মনসিংহ জামায়াত: সোহরাওয়ার্দী মুখী হাজারো নেতাকর্মী

ছবি- সংগৃহীত

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান-এর ঐতিহাসিক সমাবেশ সফল করতে স্পেশাল ট্রেনে ঢাকার উদ্দেশ্যে ময়মনসিংহ ছেড়েছেন জামায়াতে ইসলামীর হাজারো নেতাকর্মী। শনিবার ভোর ৬টা ২০ মিনিটে ময়মনসিংহ স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ট্রেনটি ছেড়ে যায়, যা জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তির এক নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে রাজনীতির মাঠে।

রেলের সুপারিটেডেন্ট নাজমুল হক খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশকে ঘিরে নেতারা স্পেশাল ট্রেন বরাদ্দের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলে তা ভাড়া হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ময়মনসিংহ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া আটটি কোচ বিশিষ্ট এই বিশেষ ট্রেনটির আসন সংখ্যা ৪২৮টি। ঢাকা যাওয়া-আসার ভাড়া বাবদ ১ লাখ ৪৭ হাজার ৪৯৮ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। সমাবেশ শেষ হলে ট্রেনটি পুনরায় ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান-এর সমাবেশ সফল করতে ভোর থেকেই ময়মনসিংহ স্টেশনে জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামী এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসবের আমেজ ও ব্যাপক উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। তাদের স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে স্টেশন চত্বর।

ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা কামরুল আহসান এমরুল, সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ কায়সার এবং সহকারী সেক্রেটারি মাহবুবুল হাসান শামীম উপস্থিত নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে দেখা যায়। মাওলানা কামরুল আহসান এমরুল বলেন, "সমাবেশ সফল করতে ময়মনসিংহ থেকে ট্রেনে ৫ হাজার নেতাকর্মী ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। আশা করছি সমাবেশে গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার চিত্র ফুটে উঠবে।" তিনি আরও বলেন, "দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনের সঠিক বার্তা আসবে সমাবেশ থেকে। কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের সে বার্তা নিয়ে আমরাও জোরালোভাবে তৃণমূলকে সুসংগঠিত করার কাজ করব।"

ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, "সোহরাওয়ার্দী উদ্যান-এর সমাবেশকে ঘিরে সারাদেশের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। সবাই সমাবেশ সফল করতে যে যার মতো করে ঢাকা যাচ্ছে।" তিনি দৃঢ়তার সাথে আরও বলেন, "এদেশের মানুষ মনেপ্রাণে চায় জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় আসুক, মানুষ জামায়াতে ইসলামীকে কতো ভালোবাসে সমাবেশই তা প্রমাণ করবে।"

বিশেষ ট্রেনের মাধ্যমে এত বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর রাজধানী অভিমুখী যাত্রা নিঃসন্দেহে জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক সক্ষমতা এবং গণভিত্তির একটি বড় প্রমাণ। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের এমন বিশাল সমাবেশ আয়োজন এবং তাতে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি, দেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এই সমাবেশ থেকে আসা বার্তাগুলো দেশের আগামী দিনের রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ময়মনসিংহ থেকে বিশেষ ট্রেনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের এই যাত্রা শুধু একটি সমাবেশের প্রস্তুতি নয়, এটি রাজনীতির মাঠে নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার একটি বড় কৌশলও বটে। এই সমাবেশ থেকে কী বার্তা আসে এবং তার প্রভাব দেশের রাজনীতিতে কতটা পড়ে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।