সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ১০:২২ এএম
আগামীকাল শনিবার পবিত্র মিলাদুন্নবি (সা.) পালিত হবে। এই দিনটি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিন, কারণ এটি মানবতার মুক্তির দূত, মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের দিন। অন্ধকারাচ্ছন্ন জাহিলিয়াতের যুগে তিনি আলোর প্রদীপ হয়ে এসেছিলেন এবং শান্তি, সাম্য ও ন্যায়ের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন। তার আদর্শ মানবজাতির জন্য যুগে যুগে কল্যাণ ও মুক্তির পথপ্রদর্শক।
মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল আরবের মক্কা নগরীতে মা আমেনার কোল আলোকিত করে পৃথিবীতে আসেন। জন্মের ৬ মাস আগে তার বাবা আব্দুল্লাহ মারা যান।
ছয় বছর বয়সে মা আমেনাকেও হারান। এরপর তার দাদা আব্দুল মুত্তালিব ও পরে চাচা আবু তালিব তাকে লালন-পালন করেন। ২৫ বছর বয়সে তিনি হযরত খাদিজা (রা.)-কে বিয়ে করেন।
চল্লিশ বছর বয়সে হেরা গুহায় ধ্যানরত অবস্থায় আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহি লাভ করেন এবং নবুওয়াত প্রাপ্ত হন। প্রথম নাজিল হয় সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত। এরপর তিনি গোপনে ইসলাম প্রচার শুরু করেন, প্রথমে নিজ পরিবারে।
মক্কায় কাফেরদের অত্যাচার বাড়লে সাহাবিদের আবিসিনিয়ায় হিজরত করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে আল্লাহর নির্দেশে প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিতে শুরু করেন। তবে কাফেরদের নির্যাতন অসহনীয় হলে তিনি ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করেন।
মদিনায় যাওয়ার পর মুসলমানদের সঙ্গে কাফেরদের কয়েকটি যুদ্ধ হয়। এর মধ্যে বদর যুদ্ধে ৩১৩ জন মুসলিম যোদ্ধা নিয়ে কাফেরদের বিরুদ্ধে মহাবিজয় লাভ করেন। উহুদ যুদ্ধে সাময়িক বিপর্যয় এলেও মুসলমানরা সাহসের প্রতীক হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেন।
এরপর হুদাইবিয়ার সন্ধি ও মক্কা বিজয় ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১০ হাজার সৈন্য নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করে তিনি কাফেরদের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করেন, যা মানবতার চূড়ান্ত বিজয় ছিল
বিদায় হজে মহানবি (সা.) সোয়া লাখ সাহাবির উদ্দেশে একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দেন, যা বিদায় হজের ভাষণ নামে পরিচিত। এই ভাষণে তিনি জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের সাম্য ও অধিকারের কথা তুলে ধরেন।
৬৩ বছর বয়সে, ১১ হিজরির ১২ রবিউল আউয়াল, তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। তার শিক্ষা ও আদর্শ আজও মানবজাতির জন্য পাথেয় হয়ে আছে।