সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ১১:০২ এএম
একজন মুমিন ব্যক্তির জন্য তার চরিত্র ও আচরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কারণ, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বা কোরআন তেলাওয়াতের মতো ইবাদত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সীমাবদ্ধ হলেও আল্লাহভীতি, সদাচরণ ও উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে একজন মানুষ সার্বক্ষণিক ইবাদতে থাকতে পারেন। পবিত্র কোরআন ও হাদিসেও এই গুণগুলোর গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহভীতি মানুষের অন্তরকে সব সময় ইবাদতের মধ্যে রাখে এবং তাকে পাপ কাজ থেকে দূরে রাখে। একইভাবে, মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করা এবং উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়াও ইবাদতের অংশ।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে একবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কোন কর্মটি সবচেয়ে বেশি মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “আল্লাহভীতি, সদাচার ও উত্তম চরিত্র।” (তিরমিজি, হাদিস: ২০০৪)। একই হাদিসে যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে, তিনি বলেন, “মুখ ও লজ্জাস্থান।” সাধারণত, মানুষ মুখ ও লজ্জাস্থানের তাড়নায় চারিত্রিক পবিত্রতা হারিয়ে ফেলে, যা ইসলামের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ। তাই মহানবী (সা.) এই দুটি অঙ্গের ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন।
আরেকটি হাদিসে সাহাল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি তার দুই চোয়ালের মাঝের বস্তু (জিহ্বা) এবং দুই উরুর মাঝখানের বস্তু (লজ্জাস্থান)-এর জামানত আমাকে দেবে, আমি তার জান্নাতের জিম্মাদার।” (বুখারি, হাদিস: ৬৪৭৪)।
এই হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায়, যদি আমরা সার্বক্ষণিক ইবাদতে নিয়োজিত থাকতে চাই এবং জান্নাতের পথে আমাদের যাত্রা সহজ করতে চাই, তাহলে অবশ্যই মুখ ও লজ্জাস্থানের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। একই সঙ্গে অন্তরে আল্লাহর প্রতি ভয় ও ভালোবাসা সৃষ্টি করতে হবে এবং মহানবী (সা.)-এর সুন্নাহ মেনে জীবন গড়তে চেষ্টা করতে হবে। এর মাধ্যমে আমাদের জীবনের প্রতিটি স্বাভাবিক কাজও ইবাদতে পরিণত হবে এবং মহান আল্লাহ আমাদের জন্য জান্নাতের পথ সুগম করবেন।