সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ১২:০৮ পিএম
রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি তার ইউটিউব চ্যানেলে তিনি বলেন, যদিও কিছু অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী বিচার বিভাগের প্রশাসনিক ও কার্যকর স্বাধীনতা এখনো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি, যা একটি হতাশাজনক বাস্তবতা। তিনি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরেন।
জাহেদ উর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে বলা হয়েছে, রাষ্ট্র থেকে বিচার বিভাগকে আলাদা করতে হবে। অথচ ১১৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলা রাষ্ট্রপতির অধীনে থাকবে, যা সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে কার্যকর হবে। তবে বাস্তবে সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতা মূলত প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শেই প্রয়োগ হয়। ফলে অধস্তন আদালতগুলো কার্যত সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়ে গেছে, যা ২২ নম্বর অনুচ্ছেদের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।
তিনি ১৯৯৯ সালের মাজদার হোসেন মামলার কথা তুলে ধরেন, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ সুপ্রিম কোর্টের হাতে দেওয়ার রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী লীগ এবং পরবর্তী বিএনপি সরকার কেউই এই রায় কার্যকর করেনি। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কিছু অগ্রগতি হলেও পূর্ণাঙ্গ পৃথকীকরণ হয়নি। জাহেদ উর রহমান বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কেবল আনুষ্ঠানিক পৃথকীকরণ নয়, বরং এর বাস্তব প্রয়োগ জরুরি। এর ফলে বিচারকরা নির্ভয়ে রায় দিতে পারবেন এবং নাগরিকরা ন্যায়বিচার পাবেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের জন্য একটি স্বচ্ছ আইন প্রণয়নের ওপরও জোর দেন, যা বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে।