শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২

স্ত্রীর মুড সুইং: কারণ ও প্রতিকার

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ১১:৪৬ এএম

স্ত্রীর মুড সুইং: কারণ ও প্রতিকার

ছবি - সংগৃহীত

'মুড সুইং' বা মানসিক অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন একটি সাধারণ সমস্যা, যা নারী-পুরুষ সবার মধ্যেই দেখা যায়। তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে স্ত্রীদের মধ্যে এই সমস্যাটি তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়। হরমোন পরিবর্তন, মানসিক চাপ এবং জীবনযাপনের বিভিন্ন কারণ এর জন্য দায়ী। এই সমস্যা তাদের দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই প্রতিবেদনে মুড সুইংয়ের কারণ এবং তা সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

মুড সুইংয়ের পেছনে কিছু প্রধান কারণ রয়েছে।

  • হরমোনের পরিবর্তন: মেয়েদের মুড সুইংয়ের অন্যতম প্রধান কারণ হলো হরমোনের পরিবর্তন। প্রজনন চক্র, গর্ভাবস্থা এবং মেনোপজের সময় হরমোনের তারতম্যের কারণে মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়। প্রোজেস্টেরন ও ইস্ট্রোজেনের মাত্রা পরিবর্তিত হলে মুড সুইং হতে পারে।

  • মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা, কাজের চাপ, সম্পর্কের সমস্যা এবং আর্থিক সংকট মানসিক চাপ সৃষ্টি করে, যা মুড সুইংয়ের কারণ হতে পারে। মানসিক চাপ বাড়লে শরীরে কর্টিসল হরমোন উৎপাদন বাড়ে।

  • খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন: অপর্যাপ্ত ঘুম, অনিয়মিত খাবার এবং অতিরিক্ত চিনি বা ক্যাফেইন গ্রহণ মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং মুড সুইং তৈরি করতে পারে।

  • মানসিক অসুস্থতা: ডিপ্রেশন, বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারের মতো মানসিক সমস্যাগুলো মুড সুইংয়ের কারণ হতে পারে।

মুড সুইংয়ের কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে, যা সহজেই বোঝা যায়।

  • আবেগের দ্রুত পরিবর্তন: এক মুহূর্তে খুব খুশি থাকা এবং পরের মুহূর্তে হতাশ বা রাগান্বিত হয়ে যাওয়া।

  • নেতিবাচক চিন্তাভাবনা: নিজেকে অক্ষম, ব্যর্থ বা অপ্রয়োজনীয় মনে করা।

  • আত্মবিশ্বাসের অভাব: নিজের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলা।

  • ক্লান্তি ও অবসন্নতা: শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি অনুভব করা।

  • খাওয়া ও ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন: অতিরিক্ত খাওয়া বা খাদ্যে অনীহা এবং ঘুমের অনিয়ম।

মুড সুইংয়ের সমাধান করতে হলে প্রথমে এর কারণ চিহ্নিত করা জরুরি। কিছু কার্যকরী উপায় মেনে চললে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

  • পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা মনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

  • স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: ধ্যান, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা মেডিটেশন মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

  • স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম মুড সুইং নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ব্যায়াম শরীরের এন্ডোরফিন নামক হরমোন নিঃসরণ করে, যা মন ভালো রাখে।

  • পারিবারিক ও সামাজিক সহায়তা: পরিবারের এবং বন্ধুদের সমর্থন মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

  • মানসিক সহায়তা: যদি মুড সুইং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে মানসিক চিকিৎসক বা কাউন্সেলরের সঙ্গে কথা বলে পেশাদার সহায়তা নেওয়া উচিত।