রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

ইফতিখার-সাইফের ঝড়ো লড়াই ব্যর্থ, গায়ানার কাছে শিরোপা হারাল রংপুর

স্পোর্টস ডেস্ক

জুলাই ১৯, ২০২৫, ১২:৪২ পিএম

ইফতিখার-সাইফের ঝড়ো লড়াই ব্যর্থ, গায়ানার কাছে শিরোপা হারাল রংপুর

সংগৃহীত

গ্লোবাল সুপার লিগের (জিএসএল) ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ হলো বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি রংপুর রাইডার্সের। গতবারের চ্যাম্পিয়নদের ৩২ রানের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা নিজেদের করে নিল স্বাগতিক গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়া এক ফাইনালে জনসন চার্লস ও রহমানউল্লাহ গুরবাজের ব্যাটে তৈরি হওয়া রানের পাহাড় টপকাতে গিয়ে শুরুতেই পথ হারায় রংপুর। তবে ইফতিখার আহমেদ ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের এক অবিশ্বাস্য পাল্টা আক্রমণে হারের আগে দুর্দান্ত লড়াই উপহার দেয় দলটি, যা ফাইনালকে দিয়েছে বাড়তি উত্তেজনা।

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোরে অনুষ্ঠিত এই হাইভোল্টেজ ফাইনালে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন গায়ানার অধিনায়ক ইমরান তাহির। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করতে খুব বেশি সময় নেননি দুই ওপেনার। জনসন চার্লস ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ মিলে উদ্বোধনী জুটিতেই মাত্র ১২১ রান যোগ করে রংপুরের বোলারদের অসহায় করে তোলেন। ৪৮ বলে ৬৭ রান করে চার্লস রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরলেও, গুরবাজের তাণ্ডব চলতেই থাকে। আফগান এই ব্যাটার মাত্র ৩৮ বলে ৬৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। শেষদিকে রোমারিও শেফার্ডের মাত্র ৯ বলে ২৮ রানের ক্যামিওতে গায়ানার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৯৬ রান, যা জিএসএলের ফাইনাালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

আমাদের ক্রীড়া প্রতিবেদকের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মূলত শেষদিকের ওভারগুলোতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে রংপুর। বিশেষ করে পেসার খালেদ আহমেদের করা শেষ ওভার থেকে ২০ রান আদায় করে নেয় গায়ানা, যা মনস্তাত্ত্বিকভাবেই পিছিয়ে দেয় সোহানের দলকে।

১৯৭ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ভেঙে পড়ে রংপুরের ব্যাটিং লাইনআপ। ইবরাহিম জাদরান, সৌম্য সরকার ও কাইল মেয়ার্সদের দ্রুত হারিয়ে প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৬৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে দলটি। ম্যাচ যখন পুরোপুরি একপেশে মনে হচ্ছিল, তখনই ক্রিজে ঝড় তোলেন ইফতিখার আহমেদ ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। এই দুই অলরাউন্ডার মিলে পাল্টা আক্রমণে গায়ানার বোলারদের ওপর চড়াও হন। তাদের ৮৫ রানের বিস্ফোরক জুটি মাত্র ৪২ বলে আসে, যা ম্যাচকে আবারও রংপুরের অনুকূলে নিয়ে আসার স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। ইফতিখার ২৫ বলে ৫৫ রানের একটি টর্নেডো ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল ৫টি বিশাল ছক্কা। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন সাইফুদ্দিন, যিনি ২৮ বলে ৪০ রান করেন।

তবে দলীয় ১৬০ রানের মাথায় ইমরান তাহিরের একটি গুগলিতে ইফতিখার আউট হতেই ম্যাচের ভাগ্য গায়ানার দিকে হেলে পড়ে। এরপর সাইফুদ্দিন একাই লড়াই চালিয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় রানের গতি ধরে রাখতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রানেই থেমে যায় রংপুরের ইনিংস। এই হারের মাধ্যমে জিএসএলে রংপুরের শ্রেষ্ঠত্বের অবসান ঘটল এবং স্বাগতিক দর্শকদের উল্লাসে ভাসিয়ে নতুন চ্যাম্পিয়ন হলো গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স।