সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০২:৪৫ পিএম
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে হরতাল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন বিএনপি, জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা। আজ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে জেলার ৯টি উপজেলার শতাধিক স্থানে সড়কে গাছ, বেঞ্চ ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে অভ্যন্তরীণ ১৮টি রুটসহ দূরপাল্লার সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি আদালত চত্বর ও জেলা নির্বাচন অফিসে তালাও ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
দোকানপাট বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও যাত্রীরা। সালাম শেখ নামের এক যাত্রী বলেন, ‘জরুরি কাজে খুলনা যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় অপেক্ষা করেও কোনো গাড়ি পাইনি।’ আরেক যাত্রী সিদ্দিক শেখ বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে খুলনায় চিকিৎসার জন্য নিতে হবে, কিন্তু কোনো গাড়ি নেই। রিকশা বা ভ্যানেও এত দূর যাওয়া সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে বাস স্ট্যান্ডে বসে আছি।’
আন্দোলনের ধারাবাহিকতা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ মিছিল এবং বুধবার ও বৃহস্পতিবার (১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর) জেলা জুড়ে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালিত হবে। নেতারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম.এ সালাম বলেন, ‘জনগণের দাবি উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন অন্যায়ভাবে বাগেরহাটের আসন কমিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত মানা হবে না।’ বাগেরহাট জামায়াতে ইসলামী আমীর মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, ‘বাগেরহাটের মানুষকে অবমূল্যায়ন করে আসন কমানোর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
গত ৩০ জুলাই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কারিগরি কমিটি খসড়া প্রস্তাবে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে তিনটি রাখার প্রস্তাব দেয়। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জেলার রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আন্দোলন শুরু করে। জেলা নেতৃবৃন্দ নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু দাবি উপেক্ষা করে গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে, যেখানে বাগেরহাটে একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন রাখা হয়।