বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২

দিনাজপুরের আওকরা মসজিদ: সংস্কারের অভাবে বিলুপ্তির পথে প্রাচীন স্থাপত্য

রিশাদ হোসেন

আগস্ট ২০, ২০২৫, ০৯:২৯ এএম

দিনাজপুরের আওকরা মসজিদ: সংস্কারের অভাবে বিলুপ্তির পথে প্রাচীন স্থাপত্য

ছবি-দিনাজপুর টিভি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার রানীরবন্দর-পাকেরহাট লোকাল সড়কের পাশে অবস্থিত ঐতিহাসিক আওকরা মসজিদ এখন সংস্কারের অভাবে তার প্রাচীন সৌন্দর্য ও অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। প্রায় আড়াইশো বছরের পুরোনো এই স্থাপত্যটি মুঘল আমলে তৈরি হয়েছিল এবং এটি দিনাজপুরের অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা।

জানা যায়, ১৭৬৬ সালে মীর জালাল বেগ এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। তৎকালীন সময়ে এটি মুসলমানদের নামাজ আদায় ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের জন্য ব্যবহৃত হতো।

বর্তমানে মসজিদটির মূল কারুকাজ ও শৈল্পিক সৌন্দর্য বিলীনের পথে। তবে ২০১৭ সালে আংশিক সংস্কারের পর থেকে স্থানীয় মুসলমানরা এখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে আসছেন। মসজিদের নাম অনুসারে পাশেই একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে।

মসজিদটির নামকরণ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা অলৌকিক গল্প প্রচলিত আছে। 'আওকরা' শব্দের অর্থ হলো 'কথা বলা'। স্থানীয়দের মতে, এই মসজিদের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় কথা বললে তা প্রতিধ্বনিত হতো। এ কারণেই স্থানীয়রা এর নাম রাখেন আওকরা মসজিদ। তবে, নির্মাণের সময় এর মূল নাম কী ছিল, তা জানা যায়নি।

এ বিষয়ে মসজিদের মুয়াজ্জিন আতিকুল ইসলাম বলেন, "মসজিদের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় কথা বললে প্রতিধ্বনি হতো। তাই স্থানীয়রা এর নাম রাখেন আওকরা মসজিদ। ২০১৭ সালে সংস্কারের পর থেকে আমরা এখানে নিয়মিত নামাজ আদায় করছি।"

ঐতিহাসিক এই মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক দর্শনার্থী আসেন। তাদের মধ্যে একজন দর্শনার্থী সাজিদুল ইসলাম বলেন, "আমি চাই, খানসামা উপজেলার এই ঐতিহাসিক আওকরা মসজিদটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।"

স্থানীয়রাও মসজিদটি সংস্কার ও সংরক্ষণের জোর দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, এই ঐতিহাসিক স্থাপত্যটি সংরক্ষণ করলে তা আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করবে, যা মানুষের মনে শান্তি ও সৌন্দর্যবোধের জন্ম দেবে।