বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২

মানুষকে কোন ধরণের মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২০, ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম

মানুষকে কোন ধরণের মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে?

ছবি- সংগৃহীত

মানুষের সৃষ্টি নিয়ে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বরাবরই একটি গভীর আলোচনা রয়েছে। পবিত্র কোরআন ও হাদিস অনুসারে, মানুষকে আল্লাহ তায়ালা মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। এই সৃষ্টি প্রক্রিয়া এবং এর তাৎপর্য একাধিক জায়গায় বর্ণনা করা হয়েছে, যা মানবজাতির অস্তিত্ব ও বৈচিত্র্যের এক মৌলিক ভিত্তি তুলে ধরে।

কোরআনে মানুষের সৃষ্টি: পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে মানুষের মাটি থেকে সৃষ্টির বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, সুরা আনআম-এর ২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, "তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন কাদা মাটি থেকে..."। এছাড়া সুরা হজ-এর ৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, "হে মানুষ! যদি তোমরা পুনরুত্থানের ব্যাপারে সন্দেহে থাক তবে নিশ্চয়ই জেনে রেখো, আমি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি, তারপর শুক্র থেকে, তারপর আলাকা থেকে, তারপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট অথবা অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট গোশত থেকে।"

এই আয়াতগুলো শুধু মানুষের সৃষ্টির সূচনাকেই নির্দেশ করে না, বরং এর মাধ্যমে মানবজীবনের বিভিন্ন ধাপ এবং মৃত্যু-পরবর্তী পুনরুত্থানের ধারণাকেও বিশ্বাসীদের সামনে তুলে ধরা হয়।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি হাদিসে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তায়ালা আদম (আ.)-কে এমন এক মুষ্টি মাটি থেকে তৈরি করেছেন, যা পৃথিবীর সকল মাটি থেকে নেওয়া হয়েছে। এই কারণেই মানবজাতির মধ্যে বর্ণ, আকার, চরিত্র ও অভ্যাসে এত বৈচিত্র্য দেখা যায়। হাদিস অনুসারে, আদম-সন্তানরা মাটির মতোই হয়েছে, তাই তাদের মধ্যে লাল, সাদা, কালো এবং বিভিন্ন রঙের মানুষ রয়েছে। একইভাবে, মানুষের স্বভাবও ভিন্ন হয় - কেউ নম্র, কেউ কঠোর, কেউ ভালো, আবার কেউ মন্দ। এই বৈচিত্র্য আসলে তাদের সৃষ্টির মূল উপাদানের ভিন্নতারই প্রতিফলন।

কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী, পৃথিবীতে মানবজাতির আগে জিন জাতি বসবাস করত। কিন্তু তারা অহংকারী ও অবাধ্য হয়ে পড়লে আল্লাহ তায়ালা তাদের শাস্তি দিয়ে পৃথিবী থেকে বিতাড়িত করেন। এরপর তিনি মানুষকে তার প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্টি করেন। মানবজাতির এই বিশেষ সৃষ্টি রহস্য তাই তাদের দায়িত্ব ও মর্যাদাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।