বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২

জুমার নামাজ না পড়লে জেল-জরিমানা: মালয়েশিয়ার নতুন আইন

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২০, ২০২৫, ১২:২০ পিএম

জুমার নামাজ না পড়লে জেল-জরিমানা: মালয়েশিয়ার নতুন আইন

সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার তরেংগানু রাজ্যে এখন থেকে কোনো বৈধ কারণ ছাড়া জুমার নামাজে অনুপস্থিত মুসলিম পুরুষদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। নতুন শরিয়াহ আইনের অধীনে এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড অথবা ৩ হাজার রিঙ্গিত (প্রায় ৫২৫ পাউন্ড) জরিমানা করা হতে পারে।

 সোমবার (২০ আগস্ট, ২০২৫) রাজ্য কর্তৃপক্ষ এই ঘোষণা দেয়। রাজ্যের নির্বাহী কাউন্সিল সদস্য মোহাম্মদ খালিল আবদুল হাদি জানান, এই শাস্তি শরিয়াহ ক্রিমিনাল অফেন্সেস (তাকযির) আইনের আওতায় কার্যকর হবে। তিনি আরও বলেন, এই আইনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ জুমার নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, এটি মুসলমানদের আনুগত্যের প্রকাশও। এর আগে টানা তিনবার জুমার নামাজ না পড়লে শাস্তির বিধান ছিল, যা এখন একবার অনুপস্থিতির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

রাজ্য সরকার জনগণকে এই নতুন আইন সম্পর্কে সচেতন করতে মসজিদগুলোতে ব্যানার টানানো এবং প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। এছাড়া, জন অভিযোগ অথবা টহল দলের মাধ্যমে নামাজ বাদ দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তরেংগানু রাজ্যের এই পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনাও শুরু হয়েছে। আইনজীবী আজিরা আজিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন যে ইসলামে কোনো জোরজবরদস্তি নেই এবং এ ধরনের আইন করার কোনো প্রয়োজন ছিল না। তিনি মনে করেন, সচেতনতা ও প্রচারণাই যথেষ্ট ছিল।

অন্যদিকে, এশিয়া হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লেবার অ্যাডভোকেটসের পরিচালক ফিল রবার্টসন এই আইনকে মানবাধিকারের প্রকাশ্য লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার মানে হলো না মানারও স্বাধীনতা। এই আইন ইসলামকে খারাপভাবে উপস্থাপন করে।” তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে এই আইন প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

মালয়েশিয়ায় শরিয়াহ এবং নাগরিক, এই দুই ধরনের আইনব্যবস্থা চালু রয়েছে। দেশটির দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ জাতিগত মালয়, যারা মুসলিম হিসেবে গণ্য হন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার শীর্ষ আদালত কেলান্তান রাজ্যের ১৬টি শরিয়াহভিত্তিক আইন বাতিল করে দিয়েছিল, যা ইসলামপন্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তরেংগানুর এই নতুন আইন শরিয়াহ আইনের কঠোর প্রয়োগের পক্ষে পাস দলের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।