আগস্ট ১০, ২০২৫, ০১:৪৫ পিএম
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাদ্য ও জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। যদিও গত কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছিল, তবে সম্প্রতি তা আবার বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্য বহন করে, কারণ এটি দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেয়।
দেশের অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। রবিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
গভর্নর জানান, নতুন বাংলাদেশ ব্যাংক আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে আর্থিক খাত রাজনীতি ও যেকোনো ধরনের হস্তক্ষেপের ঊর্ধ্বে থাকে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়বদ্ধতা বাড়াতে একটি অ্যামেন্ডমেন্ট অর্ডারও প্রস্তুত করা হচ্ছে।
সম্প্রতি টানা চার মাস কমার পর মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা বেড়েছিল। এটিকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন গভর্নর। তিনি বলেন, “ইনফ্লেশন কিছু কমেছে। আরও অনেক কমাতে হবে। তবে প্রতি মাসেই যে কমবে এই ধারণা করাটাও আবার ভুল হয়। দুই-তিন মাস কমবে, আবার এক মাস বাড়বে—এটাই স্বাভাবিক।”
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, দেশে নগদ টাকার ব্যবস্থাপনা ও ছাপাতে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। যদি ক্যাশলেস অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা যায়, তবে এই খরচ অনেকটাই কমে আসবে। ক্যাশলেস অর্থনীতিতে যাওয়ার জন্য তিনি স্মার্টফোনের দাম কমিয়ে ৬ থেকে ৭ হাজারে আনা এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা ও কর্মসংস্থান বাড়ানো আমাদের লক্ষ্য। দেশে হাউজিং লোনের পরিমাণ মাত্র ৪ শতাংশ, যা কমপক্ষে ২০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। এছাড়া ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়ানোর জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, কারণ বর্তমানে ভারতে যে পরিমাণ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার হয়, বাংলাদেশে তার দশ ভাগের এক ভাগও হয় না।”