সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

জিরো ট্যাক্স রিটার্ন’ দাখিল আইনত দণ্ডনীয়, এনবিআরের সতর্কতা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১০, ২০২৫, ১২:৫৬ পিএম

জিরো ট্যাক্স রিটার্ন’ দাখিল আইনত দণ্ডনীয়, এনবিআরের সতর্কতা

ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব আয়ের একটি প্রধান উৎস হলো আয়কর। দেশের উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে করদাতাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘জিরো ট্যাক্স রিটার্ন’ দাখিল নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর নজরে এসেছে। কিছু অসাধু চক্র করদাতাদের এমন ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করছে, যা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী গুরুতর অপরাধ। এই ধরনের ভুল তথ্য প্রচারের ফলে অনেক করদাতা নিজেদের অজান্তেই আইন ভাঙছেন, যার ফলে তাদের জেল ও জরিমানার সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এনবিআর এর এই সতর্কতার মূল উদ্দেশ্য হলো, করদাতাদের সঠিক তথ্য জানানো এবং তাদের আইনি জটিলতা থেকে রক্ষা করা।

করদাতাদের বিভ্রান্তি দূর করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘জিরো ট্যাক্স রিটার্ন’ দাখিল সংক্রান্ত বিভ্রান্তিকর তথ্যের জবাবে এনবিআর স্পষ্ট করেছে যে, আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী এই নামে কোনো প্রকার রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই। রবিবার (১০ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর এই সতর্কতা জারি করে।

এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আয়কর আইন অনুসারে একজন করদাতাকে তার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সঠিকভাবে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে যদি কোনো করদাতা তার রিটার্নের সব ঘর ‘শূন্য’ পূরণ করেন, তবে তা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

এনবিআর আরও জানায়, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩১২ ও ৩১৩ অনুযায়ী, যদি কোনো করদাতা তার আয়ের বিষয়ে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করেন, তবে তাকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।

এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল আমিন গণমাধ্যমকে জানান, “একজন করদাতার পবিত্র নাগরিক ও আইনি দায়িত্ব হলো তার আয়, ব্যয়, সম্পদ বা দায় সংক্রান্ত বিষয়ে রিটার্নে সঠিক ঘোষণা প্রদান করা। প্রকৃত আয়ের পরিমাণ আইনানুযায়ী করযোগ্য না হলেও সঠিক তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন না করে শূন্য আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখানো আইনত দণ্ডনীয়।”

তিনি আরও বলেন, “কর প্রদান করা না লাগলেও করদাতাকে অবশ্যই তার সকল অর্থনৈতিক তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে হবে। ‘জিরো রিটার্ন’ বলে কোনো ফাঁকফোকর নেই। করদাতাদের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে হবে।”

এনবিআর আশা করে, সকল করদাতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত প্রতারণামূলক তথ্যের ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড থেকে সুরক্ষিত রাখবেন।