আগস্ট ১১, ২০২৫, ১০:১৮ এএম
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের নিত্যপণ্যের বাজার আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ ভোক্তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পেঁয়াজের মৌসুম শেষ, আমদানি বন্ধ এবং টানা বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছেন। তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনে একটি অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজি রয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ ও কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
দেশজুড়ে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এক মাস আগেও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৯০ টাকায় ঠেকেছে। ব্যবসায়ীরা সরবরাহ সংকট, মৌসুম শেষ হওয়া এবং আমদানি বন্ধ থাকার অজুহাত দেখালেও বাস্তবে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আমদানি সচল করার সুপারিশ করবে বলে জানা গেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার এবং মালিবাগসহ বিভিন্ন খুচরা বাজারে বিক্রেতারা জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে আড়তদাররা পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। গত ৩১ জুলাই ৫৫ টাকা কেজি দরের পেঁয়াজ ১ আগস্ট ৬০ টাকা এবং ৮ আগস্ট শুক্রবার ৮৫ টাকায় বিক্রি হয়। রবিবার তা আরও বেড়ে ৯০ টাকায় পৌঁছেছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে 'অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে' দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “প্রতিবছর একই প্রক্রিয়ায় পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে কারসাজি করে ক্রেতাকে ঠকানো হচ্ছে। কিন্তু এর কোনো স্থায়ী সমাধান বা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তদাররাও জানান, বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় বাজার পুরোপুরি দেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল। ভারি বর্ষণের কারণে মোকামগুলোতে পর্যাপ্ত সরবরাহ না হওয়া এবং পরিবহণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পেঁয়াজের দাম সহনীয় রাখতে তিন স্তরে—কৃষক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে—তদারকি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “যদি কোনো অসাধু উপায়ে দাম বাড়ানো হয়, তাহলে জড়িতদের সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি, পেঁয়াজের মূল্য সহনীয় রাখতে আমদানি সচলের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে।”