মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

আরব নেতাদের নীরবতা: রক্তে ভাসছে গাজা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ৮, ২০২৫, ০৯:২৪ এএম

আরব নেতাদের নীরবতা: রক্তে ভাসছে গাজা

ছবি- সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় রক্তপাত, ধ্বংসযজ্ঞ আর দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ চিত্র যখন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করছে, তখন আরব বিশ্বের নেতাদের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, আরব শাসকদের এই নিষ্ক্রিয়তা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের কাছে তাদের দীর্ঘদিনের আত্মসমর্পণেরই ধারাবাহিকতা।

গাজার অলিগলিতে যখন বোমা আর বুলেটের আঘাতে সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে, তখন আরব বিশ্বের রাজপ্রাসাদগুলো নীরব। তাদের কেউ কেউ কেবল বিবৃতি দিয়ে দায় সারছেন, কিন্তু বাস্তবে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। মিডিয়া এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, আরব শাসকরা নিজেদের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের নীতির প্রতি অনুগত থাকছেন, যার কারণে ফিলিস্তিন প্রশ্নে তারা নিজেদের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন।


 ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ উসামা মাকদিসি 'মিডল ইস্ট আই'-এ লেখা এক নিবন্ধে বলেন, এটি নতুন কোনো ঘটনা নয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি মধ্যপ্রাচ্যে এমন কিছু আরব রাষ্ট্র গঠন করেছিল, যা ওই অঞ্চলের মানুষের পরিবর্তে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ রক্ষা করবে। তারা 'পরোক্ষ শাসন' নীতি গ্রহণ করে স্থানীয় শাসকদের ক্ষমতায় বসিয়ে নিজেদের আধিপত্য টিকিয়ে রাখে। ১৯৬৭ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সেই ব্রিটিশদের জায়গা নেয় এবং একই ধরনের 'আরব মুখোশ' তৈরি করে, যা আজও চলছে।

মাকদিসির মতে, বর্তমান আরব শাসকরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নীতির প্রতি অনুগত থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে তারা ফিলিস্তিনের মতো সংবেদনশীল ইস্যুতে জনমতের বিরুদ্ধে গিয়েও নীরব থাকছেন। এই নীরবতা শুধু গাজার জনগণের জন্য নয়, বরং পুরো আরব বিশ্বের মর্যাদার জন্যই এক গভীর সংকট।

এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত আছে। বৃহস্পতিবারও তাদের হামলায় শিশুসহ অন্তত ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে এবং খাদ্য ও পানীয়ের তীব্র সংকটে অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে আরব দেশগুলোর পক্ষ থেকে আরও কার্যকর ও কঠোর পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।