মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

ভারতে বিদেশি অর্ডার স্থগিত, চলে যাচ্ছে বাংলাদেশ-পাকিস্তানে

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম

ভারতে বিদেশি অর্ডার স্থগিত, চলে যাচ্ছে বাংলাদেশ-পাকিস্তানে

ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার সম্প্রতি ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে, যা ভারতের তৈরি পোশাক এবং টেক্সটাইল শিল্পের জন্য এক বড় ধাক্কা হিসেবে এসেছে। এই শুল্কের কারণে ভারতের পণ্য আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। ফলস্বরূপ, বিশ্বের নামিদামি অনেক ব্র্যান্ড তাদের অর্ডার ভারতে বাতিল বা স্থগিত করে দিয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে। এই ঘটনা ভারতের অর্থনীতিতে একটি বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্কের প্রভাবে ভারতের তৈরি পোশাক খাত চরম সংকটে পড়েছে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বড় ব্র্যান্ড তাদের পোশাকের অর্ডার ভারতে বাতিল বা স্থগিত করে দিয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোতে সরিয়ে নিচ্ছে।

ভারতের নিটওয়্যার শিল্পের অন্যতম কেন্দ্র তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুরের রপ্তানিকারকরা ইতোমধ্যে এর প্রভাব অনুভব করতে শুরু করেছেন। তারা বলছেন, দীর্ঘদিনের ক্রেতারা এখন নতুন অর্ডার দিতে দ্বিধা করছেন এবং সস্তা বিকল্প খুঁজছেন। একজন রপ্তানিকারক জানান, তার প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত মার্কিন চালান ইতোমধ্যে পাকিস্তানে চলে গেছে। আরেকজন বলেন, তার ক্রেতা গ্রীষ্মকালীন অর্ডার নিশ্চিত করার আগে 'অপেক্ষা' করতে বলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক কাঠামোর কারণে ভারতীয় কিছু নিটওয়্যার পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কের কার্যকর হার ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এর ফলে ভারতীয় পণ্যের দাম আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি হচ্ছে। তিরুপ্পুরের রপ্তানিকারকদের সংগঠন (টিইএ)-এর সভাপতি কে এম সুব্রাহ্মনিয়ান বলেন, “এটি বড় ধাক্কা। আমাদের পণ্যের ওপর এত বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে যে, আমাদের মুনাফা কার্যত উধাও হয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “ভারতের রপ্তানির ৩০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে যায়। এই বাজার হারালে আমাদের অর্থনীতিতে বড় ক্ষতি হবে।”

ভারতীয় রপ্তানিকারকদের মতে, বাংলাদেশের ওপর শুল্ক হার ৩৫-৩৬ শতাংশ, পাকিস্তানের ১৯ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ২০-২১ শতাংশ। কম্বোডিয়ার শুল্কও সম্প্রতি ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এই কারণে ভারত এখন প্রতিযোগিতায় অনেক পিছিয়ে পড়েছে।

এই পরিস্থিতির ফলে তিরুপ্পুর, কারুর ও কোয়েম্বাটুরে প্রায় এক থেকে দুই লাখ শ্রমিকের চাকরি হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। রপ্তানিকারকরা সরকারের কাছে তুলার ওপর আমদানি শুল্ক বাতিল এবং জিএসটি পর্যালোচনার দাবি জানিয়েছেন, যাতে তারা আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে পারে।